অভিবাসী কাকে বলে ? জার্মানদের রোম সাম্রাজ্যের অভিবাসী বলা হয় কেন?
অভিবাসী ও জার্মানদের ওপর খ্রিস্টধর্মের প্রভাব
অভিবাসী কাদের বলা হয়? জার্মানদের রোম সাম্রাজ্যের অভিবাসী বলা হয় কেন?
উত্তরঃ বহিরাগত মানুষ যখন কোনো দেশের ভেতরে বসতি স্থাপন করে তখন সেই মানুষকে অভিবাসী বলা হয়।
জার্মান মানুষরাও ছিল রোম সাম্রাজ্যের অভিবাসী। কারণ কালক্রমে তারা রোম সাম্রাজ্যের মধ্যে বসতি বিস্তার করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে।
অভিবাসী জার্মানদের ওপর খ্রিস্টধর্মের প্রভাব সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যে প্রবেশ করে জার্মান জাতি খ্রিস্টধর্মের সংস্পর্শে আসে। খ্রিস্টধর্ম থেকে তারা নৈতিকতা, সদাচার ও সংযমের শিক্ষা গ্রহণ করে। জার্মানদের আদি ধর্ম ছিল অলিখিত কিন্তু খ্রিস্টধর্ম ছিল ল্যাটিন ভাষায় লিখিত। নতুন ধর্মকে বোঝার আগ্রহে অনেকেই ল্যাটিন ভাষা গ্রহণ করে। এভাবে জার্মানদের যাযাবর জীবনের পরিবর্তন ঘটে। দুর্ধর্ষ জাতিগুলি উন্নত সভ্যতার সংস্পর্শে এসে ক্রমশ সুসভ্য হয়ে ওঠে। ইউরোপীয় সংস্কৃতিও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়।
উত্তরঃ জার্মানরা ছিল মূলত টিউটন জাতি। তারা স্ক্যান্ডেনেভিয়া অঞ্চল থেকে এসেছিল। তাদের নিজস্ব সভ্যতা ছিল। রোম সাম্রাজ্যে প্রবেশ করার পর থেকে তাদের সঙ্গে রোমানদের দেওয়া-নেওয়া শুরু হয়। ক্রমে ক্রমে তাদের ধর্মও জার্মানরা গ্রহণ করল। রোমানদের ধর্ম ছিল খ্রিস্টধর্ম। এই খ্রিস্টধর্ম রোম সাম্রাজ্যের বিজেতা জার্মানদেরও জয় করল। খ্রিস্টান ধর্মের সংগঠন, শৃঙ্খলা ও ধর্মযাজকদের জীবন জার্মানদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পরে তাদের আচার-আচরণের পরিবর্তন হয়। ধীরে ধীরে জার্মান ও রোমান—এই দুই সভ্যতার ধারা মিলে ইউরোপে জন্ম নিল এক নতুন সভ্যতা ও সংস্কৃতি।
জার্মান অভিবাসীগণ ইউরোপের কোথায় কোথায় বসতি স্থাপন করেছিল?
উত্তরঃ জার্মান অভিবাসীদের মধ্যে ফ্রাঙ্করা বসতি স্থাপন করেছিল রাইন নদীর তীরে এবং ইডানো অঞ্চলে—হল্যান্ড, ফ্ল্যান্ডার্স, কলোম প্রভৃতি স্থানে। স্যাক্সন ও কেল্টরা চলে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। ভিসিগথরা পীরেনিজ পাহাড় অতিক্রম করে স্পেনে বসতি স্থাপন করে। ভ্যান্ডালরা গিয়েছিল দক্ষিণ স্পেন ও উত্তর আফ্রিকায়। অস্ট্রোগথরা মধ্য ইতালি ও বলকান অঞ্চলে এবং লম্বার্ডরা দক্ষিণ ইতালিতে। এইভাবে রোম সাম্রাজ্যের অভিবাসী রূপে জার্মানরা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল।