আমাজন অববাহিকা প্রশ্ন উত্তর
আমাজন অববাহিকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
1. আমাজন নদীর দৈর্ঘ্য কত ?উত্তরঃ আমাজন নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় 6450 কিমি।
2. আমাজন নদীর উৎপত্তি স্থান কোথায় ?
উঃ আন্দিজ পর্বতমালার মিশমী শৃঙ্গ থেকে আমাজন নদীর উৎপত্তি হয়েছে।
3. আমাজন নদীর একটি উপনদীর নাম কী ?
উত্তরঃ আমাজন নদীর একটি উপনদী ম্যারানন।
4. আমাজন কথার অর্থ কী ?
উত্তরঃ আমাজন কথার অর্থ বীর রমণী।
5. কোন পর্যটক আমাজন নামকরণ করেন ?
উত্তরঃ পর্যটক ওরেল্লানা আমাজন নামকরণ করেন।
6. কোন নদীকে কেন্দ্র করে আমাজন অববাহিকা ?
উত্তরঃ আমাজন নদীকে কেন্দ্র করে আমাজন অববাহিকা।
7. আমাজন অববাহিকার জলবায়ু কীরূপ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকার জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র।
8. আমাজন অববাহিকার উল্লেখযােগ্য দুটি পাখির নাম কী ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকার উল্লেখযােগ্য দুটি পাখির নাম ক্যানডর এবং রিয়া।
9. আমাজন অববাহিকার অর্থনৈতিক সম্পদ কী ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকার অর্থনৈতিক সম্পদ রবার।
10. আমাপা কী জন্য বিখ্যাত ?
উত্তরঃ ম্যাঙ্গানিজ খনি থাকার জন্য আমাপা বিখ্যাত।
11. কোন ধরনের রবার আমাজন অববাহিকায় বেশি জন্মায় ?
উত্তরঃ হেভিয়া নামক রবার আমাজন অববাহিকায় বেশি জন্মায়।
12. আমাজন অঞ্চলের অধিবাসীদের প্রধান উপজীবিকা কী ?
উত্তরঃ কাষ্ঠ সংগ্রহ, বনজ রবার এবং নাট (বাদাম) সংগ্রহ প্রধান উপজীবিকা।
13. আমাজন অববাহিকায় গহন বনভূমির নাম কী ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকায় গহন বনভূমির নাম সেলভা।
14. আমাজন অববাহিকায় কী কী উদ্ভিদ দেখা যায় ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকায় ব্রাজিল নাট, মেহগিনি, আবলুস, রবার, পাম ইত্যাদি উদ্ভিদ দেখা যায়।
15. আমাজন অববাহিকার কৃষিজ ফসল কী কী ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকার কৃষিজ ফসল হল— আখ, ভুট্টা, তুলা, ধান, বিট, খামালু ইত্যাদি।
16. রবার সংগ্রহের প্রধান বন্দরের নাম কী ?
উত্তরঃ রবার সংগ্রহের প্রধান বন্দরের নাম নিগ্রো নদীর কাছে মােনাওস।
17. আমাজন অববাহিকায় কালাে সােনা কাকে বলে ?
উত্তরঃ রবারকে আমাজন অববাহিকায় কালাে সােনা বলে।
18. আমাজন অববাহিকার দুটি শহরের নাম করাে।
উত্তর। আমাজন অববাহিকার দুটি শহরের নাম মানাওস ও বেলেম।
19. আমাজন অববাহিকার আয়তন কত ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকার আয়তন প্রায় ৭০ লক্ষ বর্গ কিমি।
20. আমাজন নদীর মােহনায় বড়াে দ্বীপটির নাম কী ?
উত্তরঃ আমাজন নদীর মােহনায় বড়াে দ্বীপটির নাম ম্যারাজ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
1. আমাজন অববাহিকার ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু কীরূপ?
উত্তরঃ ভূপ্রকৃতি: উঁচু ও পার্বত্য অঞ্চল ছাড়া আমাজন অববাহিকার বেশিরভাগ অঞ্চল নরম পলিমাটি দিয়ে গঠিত সমতলভূমি। প্রায় সব অঞ্চলটি পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ঢালু। মধ্য সমতলভূমি অঞ্চলের ঢাল কম, এ কারণে আমাজন নদী এখানে মন্থর গতিতে প্রবাহিত।
জলবায়ু: আমাজন অববাহিকা নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত। এই জলবায়ুর প্রভাবে সারা বছর প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে 200 থেকে 250 সেন্টিমিটার, আবার গড় উষ্ণতা 27° সেন্টিগ্রেড। প্রচুর বৃষ্টিপাত, প্রচুর উষ্ণতা ও নিবিড় বনভূমির জন্য এখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
2. দক্ষিণ আমেরিকার কোন অঞ্চলকে আমাজন অববাহিকা বলে ?
উত্তরঃ দক্ষিণ আমেরিকার কলম্বিয়া দেশের কতকাংশ এবং ব্রাজিলের পশ্চিমাংশকে আমাজন নদী বিধৌত আমাজন অববাহিকা অঞ্চল বলে।
3. আমাজন অববাহিকার নদনদী সম্বন্ধে লেখাে।
উত্তরঃ আমাজন নদী হল আমাজন অববাহিকার প্রধান নদী। এই নদী জলবহনের বিচারে পৃথিবীর প্রথম স্থান অধিকার করে। দৈর্ঘ্যে দ্বিতীয়। অসংখ্য উপনদী নিয়ে এই নদী গঠিত। এর দক্ষিণ তীরে জুরুয়া, মাদিরা, পুরাস, টাপাজোস, জিঙ্গ, টোকানটিনস প্রভৃতি উপনদী উল্লেখযােগ্য। এদের মধ্যে মাদিরা উপনদী আমাজন নদীর বৃহত্তম (3,2,20 কিমি) উত্তরদিক থেকে জুগুরা, নেগ্রো প্রভৃতি নদী আমাজনে মিলিত হয়েছে। মােহনা অত্যন্ত চওড়া। প্রচুর জলধারা এবং প্রবল স্রোতের কারণে মােহনায় ব-দ্বীপ গঠিত হয়নি।
4. আমাজন অরণ্যে কী কী প্রাণী বিচরণ করে ?
উত্তরঃ আমাজন অরণ্যে নানাজাতীয় জীবজন্তু, সরীসৃপ ও পাখি বিচরণ করে। আনাকোন্ডা সাপ খুবই ভয়ঙ্কর। ম্যাক, টুকান, তােতাপাখি, টাপির, অ্যান্ট ইটার, বন্যশূকর, বানর, গরিলা, শিম্পাঞ্জি, জাগুয়ার, বাদুর, রক্তচোষা জোক, মশা, মাছি এবং নানা রঙের কীটপতঙ্গের সংখ্যা প্রচুর। নদীর তীরে
সাপ, অ্যালিগেটর, কচ্ছপ প্রভৃতি বিচরণ করে।
5. আমাজন অববাহিকা কৃষিকার্যে অনুপযুক্ত কেন? এখানে কী কী শস্য উৎপন্ন হয় ?
উত্তরঃ আমাজন অববাহিকা অঞ্চল কৃষিকার্যে অত্যন্ত অনুন্নত। জঙ্গল পুড়িয়ে সামান্য জমি চাষ হয়। স্থানীয় অধিবাসীরা বনভূমির কিছু কিছু অংশ পরিষ্কার করে কলা, মিষ্টি আলু, ট্যাপিওকা, আখ, তামাক ও ধান চাষ করে। ট্যাপিওকার মূল হতে একপ্রকার স্নেহজাতীয় খাদ্য প্রস্তুত হয়।
6. আমাজন অববাহিকায় শিল্পের বিশেষ বিকাশ হয়নি কেন?
উত্তরঃ কোনাে শিল্প গড়ে ওঠার জন্য কতকগুলাে অনুকূল ভৌগােলিক কারণ থাকে ; যেমন—কাঁচামালের পর্যাপ্ত যােগান, মূলধন, উন্নত কারিগরি বিদ্যা, পরিবহন, জলবায়ু, বাজার ইত্যাদি। এসব কোনােটাই দক্ষিণ আমােরিকার আমাজন অববাহিকায় দেখা যায় না। এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত, প্রচুর সূর্যতাপ, গভীর অরণ্য, স্যাতসেঁতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অনুন্নত পরিবহন সবটাই প্রতিকূল দেখা যায়। এ কারণে এখানে শিল্পের বিশেষ বিকাশ ঘটেনি।