মিতব্যয়িতা রচনা
মিতব্যয়িতা রচনা
ভূমিকা
আয়-ব্যয় নিয়ে মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রিত হয়। নির্দিষ্ট আয় এবং পরিমাণ মত ব্যয় করে মানুষ সংসার জীবন অতিবাহিত করে। একই পরিমাণের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের মধ্যে দেখা যায় কেউ সৌভাগ্যের উচ্চশিখরে উঠেছে আবার কারোর সংসার ঢিমে তালে চলছে। আয়-ব্যয়ের সমতা না রাখার জন্য মানুষকে ভুগতে হয়। আয়-ব্যয়ের সমতা রক্ষা করে যে মানুষ সংসারে মাথা তুলে ভাল ভাবে বাঁচে তাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কারণ তিনি মিতব্যয়ী ; আয় অনুযায়ী ব্যয় করেন এবং তার ফলে তিনি সবদিক গুছিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছেন। মিতব্যয়িতা মানব জীবনের অনেকগুলি গুণের মধ্যে একটি।
মিতব্যয়িতার স্বরূপ
পরিমিত ব্যয় করাকে মিতব্যয়িতা বলে। ব্যয় কথাটির সঙ্গে আয়-উপার্জন কথাটি যুক্ত। আয় না করলে ব্যয় করা যায় না। আয়-ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকলে মানুষ অসুবিধায় পড়ে। আয়ের অধিক ব্যয় করলে ঋণের পাহাড় জমে ওঠে। ঋণ শেষ করার ঝুঁকি অনেক। মিতব্যয়ী মানুষকে ঋণ করতে হয় না। বুঝে সুঝে আয়ের পরিমাণ মত ব্যয় করলে কোন অসুবিধা হয় না। মিতব্যয়িতা স্বরূপ এটিই।
মিতব্যয়িতার সুফল
মিতব্যয়ী মানুষের সবচেয়ে বেশি সুখী হয়। কারণ তারা যা আয় করেন তা পরিমিত ব্যয় করেন। ফলে তাঁদের ভবিষ্যতে কোন অসুবিধায় পড়তে হয় না। আয় অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে পারেন। সংসারের কাজকর্ম রূপায়ণের ক্ষেত্রে পরমুখাপেক্ষী হতে হয় না। শুধু তাই নয় ভবিষ্যতের জন্য ভাবতে হয় না। কারণ ব্যয়ের পরে তাঁর কিছু সঞ্চয় থাকে। অমিতব্যয়ী মানুষের ভবিষ্যত অন্ধকার। কষ্ট এবং মানসিক আঘাত তাঁকে পদে পদে বরণ করতে হয়।
উপসংহার
মানুষের চলার পথে মানুষকে অনেক কিছু সমঝোতা করে চলতে হয়। মিতব্যয়ী মানুষ সেই সমঝোতায় বিশ্বাসী। তাই তাকে কখনো ঋণ-গ্রস্ত হতে হয় না। শুধু অর্থের ব্যাপারে মিতব্যয়ীতার প্রশ্ন আসে না ; জীবনের অনেক ক্ষেত্রে এই অভ্যাসের প্রয়োজন। "Too much every thing is bad"—অতিরিক্ত কিছুই খারাপ। এই আপ্তবাক্য মনে রাখতে হবে। কথায়-কাজে ব্যবহারে পরিমিত হওয়া দরকার।