কম্পিউটার রচনা

কম্পিউটার রচনা

ভূমিকা

আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার হল ইলেক্ট্রনিক্স। সেই ইলেকট্রনিক্সের এক অবদান হল কম্পিউটার বা যন্ত্র-গণক। এই কম্পিউটার মানুষের মস্তিকের শ্রম বহুলাংশে কমিয়ে দিয়েছে। মানব-মস্কিষ্কের বহু কাজই এখন কম্পিউটার করছে।

কম্পিউটার আবিষ্কার

কম্পিউটার কোন একদিনে কোন একক প্রচেষ্টায় আবিষ্কৃত হয়নি। এর পেছনে আছে প্রায় দেড়শ বছরের বহু ব্যক্তির নানা আবিষ্কার ও চিন্তা-ভাবনা । তবে এ ব্যাপারে চালর্স ব্যাবোজের নাম সবার আগে স্মরণীয়। কারণ তিনি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিক কম্পিউটার তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। এর পর নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর পূর্ণতা পায়। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ‘ফার্স্ট জেনারেশন কম্পিউটার’ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বৈজ্ঞানিক কাজকর্মে ব্যবহার শুরু করে। এখন আবিস্কৃত হয়েছে নানারকমের কম্পিউটার—ব্যবহৃতও হচ্ছে নানারকম কাজে।

কম্পিউটারের গঠন পদ্ধতি

কম্পিউটার হল এমন একটি ইলেকট্রনিক নির্ভর যান্ত্রিক ব্যবস্থা যার তথ্য ও নির্দেশ গ্রহণ ও সংরক্ষণের ক্ষমতা আছে এবং সংগৃহীত তথ্য ও নির্দেশের সাহায্যে জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে। কম্পিউটারে কার্ড রিডার, কার্ড পাঞ্চিং মেশিন, লাইন প্রিন্টার, টাইপ রাইটার, ম্যাগনেটিক টেপ ইত্যাদি নানা অংশ থাকে। এগুলির প্রত্যেকটি আবার তারের দ্বারা সংযুক্ত থাকে। তার ফলে গড়ে ওঠে একটি নিখুঁত গণনা-ব্যবস্থা।

কম্পিউটারের শ্রেণিবিভাগ

তথ্য গ্রহণ এবং সাজানোর দিক দিয়ে কম্পিউটারকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়—এনালগ ও ডিজিট্যাল ৷ এনালগ কম্পিউটার নানারকম জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে। এর খরচ খুব অল্প যার ফলে এজাতীয় কম্পিউটার সংগ্রহ করা সহজ কিন্তু এদের তথ্য সংরক্ষণ ক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ। আর ডিজিট্যাল কম্পিউটার সরবরাহ করা তথ্যকে সম্পাদনা করতে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। এদের তথ্য মজুতের ক্ষমতাও বেশি। এ জাতীয় কম্পিউটার ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। এইসব কম্পিউটার খুবই ব্যয়বহুল এবং এদের তথ্য সরবরাহ পদ্ধতি খুব জটিল।

কম্পিউটারের ব্যবহার 

যে-কোন জটিল গাণিতিক সমস্যার নির্ভুল সমাধানে কম্পিউটার অতি দক্ষ। কোন সূক্ষাতিসূক্ষ হিসেব খুব সহজেই করে দিতে পারে। এছাড়া ছবি বা গ্রাফ আঁকা, কোন ফাইল খোঁজা, চিঠি লেখা, বই ছাপা, বিভিন্ন তথ্যকে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো, কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ইত্যাদি বহু বিচিত্র রকম কাজে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, মহাকাশ অভিযান, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, গবেষণা ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার করা হয়।

কম্পিউটারের সীমাবদ্ধতা

একটা কথা মনে রাখতে হবে–কম্পিউটার যত যা-ই করুক না কেন, তার নিজস্ব কোন চিন্তাশক্তি নেই। সরবরাহ করা তথ্যের বাইরে কম্পিউটার কোন কাজ করতে পারে না। ‘প্রোগ্রামই’ হল তার মূল কথা। কম্পিউটারকে দেওয়া নির্দেশ বা তথ্যই হল প্রোগ্রাম। আর যিনি তথ্য সরবরাহ করেন বা নির্দেশ দেন তাঁকে বলা হয় প্রোগ্রামার। প্রোগ্রামের উপর ভিত্তি করেই কম্পিউটার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে।

উপসংহার

বিজ্ঞান নানাভাবে আমাদের দেহ-মনের ভার লাঘব করছে। ইলেকট্রনিক্সের আবিষ্কার আমাদের উপহার দিয়েছে রোবট বা যন্ত্রমানব এবং কম্পিউটার বা যন্ত্রগণক।এর ফলে মানুষের দৈহিক এবং মানসিক শক্তিকে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে।

এই প্রবন্ধের সাহায্যে লেখা যায়
1. কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা।
2. ভারতে কম্পিউটারের ব্যবহার।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url