বায়ু দূষণ রচনা
বায়ু দূষণ রচনা
ভূমিকা
পৃথিবীর জল স্থল বায়ু আজ দূষিত। এই দূষণ আজ একটি বড় সমস্যা। অথচ সৃষ্টির সময় প্রকৃতি ছিল সম্পূর্ণ দূষণ মুক্ত। মানুষ বিজ্ঞানের সহায়তায় প্রকৃতিকে যতই জয় করতে চেয়েছে, ততই পরিবেশ হয়ে উঠেছে দূষিত।
পরিবেশ দূষণ বলতে কী বোঝায়
আমাদের চারপাশের গাছপালা,পশুপাখি, জীবজন্তু, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, মাটি, জল, স্থল, বায়ুমণ্ডল ইত্যাদি নিয়েই আমাদের পরিবেশ। এই পরিবেশ যদি সুস্থ থাকে তবে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের বিকাশ সম্ভব। এই পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়লে তাকে পরিবেশ দূষণ বলে। বায়ু দূষণ এই পরিবেশ দূষণের একটি প্রধান দিক।
বায়ুদূষণ
পৃথিবীর উপরিভাগ থেকেই বায়ুমণ্ডলের বিস্তার। মানুষ ও জীবজগতের বেঁচে থাকার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন বিশুদ্ধ বায়ু। সেই বায়ুই আজ দূষিত। শিল্প বিপ্লব, পারমাণবিক বিস্ফোরণ প্রভৃতি বায়ুমণ্ডলকে ক্রমশই দূষিত করে তুলেছে। কলকারখানা এবং যানবাহনের বিষাক্ত গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিমান, রকেট, উপগ্রহৎনিঃসৃত গ্যাস, রান্নার ফলে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া বায়ুমণ্ডলকে দূষিত করে তুলছে। বায়ু দূষণের অপর উল্লেখযোগ্য কারণ হল, গাছপালা কেটে ফেলা কারণ গাছ বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ফিরিয়ে দেয়। সেই অক্সিজেন আমরা গ্রহণ করি। এইসব কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড প্রভৃতি বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা প্রচণ্ড পরিমাণে বেড়ে গেছে।
প্রতিক্রিয়া
বায়ুদূষণের ফলে বৃষ্টির ফোঁটা বায়ুমণ্ডল ভেদ করে আসার সময় তাতে বিষাক্ত অ্যাসিড মিশে যাচ্ছে এর ফলে যে বৃষ্টি হয় তাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বলে। এই অ্যাসিড বৃষ্টি জলাশয়ে মিশে গিয়ে মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, গাছপালা স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে এবং ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থাপত্য কীর্তি ক্ষয়ে যাচ্ছে। বায়ু দূষণের ফলে বৃষ্টিপাতের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটছে, ঋতুচক্রের আবর্তনে বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে।
বায়ুদূষণের ফলে বিভিন্ন রোগজীবাণুর বংশবৃদ্ধি দ্রুততর হচ্ছে। মানুষ নানারকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে যেমন হাঁপানি, বিভিন্ন চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, মাথার যন্ত্রণা, ক্যানসার প্রভৃতি।
প্রতিকার
বায়ু দূষণ সম্পর্কে মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছে। বায়ুদূষণের চরম পরিণতি হিসাবে মানব সভ্যতা যাতে বিলুপ্ত না হয়ে যায়, সে বিষয়ে মানুষকে সতর্ক হতে হবে। প্রতিবছর ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসাবে পালিত হয়। কলকারখানা যানবাহন নিঃসৃত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া যাতে বায়ুমণ্ডলের ক্ষতি করতে না পারে সেয়বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। তাছাড়া নির্বিচারে গাছপালা ধ্বংস না করে বরংৎবনসৃজন করে বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। পারমাণবিকৎবিস্ফোরণ, রকেট উৎক্ষেপণ ইত্যাদি যাতে বায়ুমণ্ডল দূষিত করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।
উপসংহার
সুস্থ পরিবেশ রক্ষার জন্য মানুষকে আরও সচেতন করে তুলতে হবে। মানুষের বিপদ সম্পর্কে মানুষকেই সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে চাই কঠোর আইন ওয়তার প্রয়োগ। না হলে ভবিষ্যতে মানব সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়।
এই প্রবন্ধের সাহায্যে লেখা যায় :
বায়ু দূষণের ফল।
পরিবেশ দূষণ ও মানব জীবন।
বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার।
Thank you
Thank you❤❤❤