সরস্বতী পূজা রচনা
সরস্বতী পূজা রচনা
ভূমিকা
হিন্দু দেবদেবীর মধ্যে দেবী সরস্বতী খুবই জনপ্রিয়। ইনি বিদ্যার দেবী। যার ফলে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক-অভিভাবিকা ও সাধারণ মানুষ সকলেই দেবী সরস্বতীর আরাধনা করেন। দেবী সরস্বতী শুধুই বিদ্যার দেবী নন, তিনি সঙ্গীতের ও ললিতকলার দেবীও। হিন্দুদের কাছে দুর্গার পরেই সরস্বতীর স্থান। দেবীর পূজা কেবলমাত্র ভারতে সীমাবদ্ধ নয়, বহির্বিশ্বেও দেবীর পূজার প্রচলন আছে।
দেবীর বর্ণনা
দেবীর সরস্বতী সর্বশুক্লা। তাঁর বসন ও গায়ের রং শুভ্র। তিনি যে পদ্মের উপর আসীন তাও শ্বেত পদ্ম। তাঁর বাহন হংসও শ্বেত রঙের। দেবীর হস্তে একটি বীণা থাকে।
পূজা অনুষ্ঠান ও আনন্দ
দেবী সরস্বতীর পূজা মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়। সেজন্য এই পূজার আর এক নাম শ্রীপঞ্চমী। শীতের শেষ ও বসন্তের প্রারম্ভে দেবীর আরাধনার এই সময়টি খুবই মনোমুগ্ধকর। দেবী সরস্বতীর পূজা ছাত্র-ছাত্রীদের মনে খুবই উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঞ্চার করে। পূজার আগের দিন ছাত্র-ছাত্রীরা নিরামিষ ভোজন করে এবং মনকে পবিত্র রাখে। পূজার দিন সকালে স্নান করে নতুন অথবা পরিষ্কার জামা কাপড় পরে ফুল তুলে পূজা মণ্ডপে উপস্থিত হয়। অঞ্জলি না দেওয়া পর্যন্ত এদিন সকলেই উপবাসে থাকে। পূজা শেষ হলে অঞ্জলি দিয়ে তারপর ছাত্র-ছাত্রীরা প্রসাদ নেয়। পূজার মণ্ডপটি খুবই সুসজ্জিত করা হয়। পূজার স্থানে দেবী প্রতিমার সম্মুখে বই, দোয়াত, কলম ইত্যাদি রাখা হয়ে থাকে। অনেকের এই দিনে 'হাতে খড়ি’ হয়। সন্ধ্যার দিকে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে আলোকসজ্জা দেখা যায়।
এই দিনটিকে ঘিরে ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহের অন্ত থাকে না। কোন কোন বিদ্যালয়ে অথবা বারোয়ারি পূজামণ্ডপে ‘খিচুড়ি’ খাওয়ানোর ব্যবস্থা থাকে। সন্ধ্যার দিকে নানা রকমের উৎসব-অনুষ্ঠানও হতে দেখা যায়। বিশেষত ‘সারস্বত অনুষ্ঠানগুলি খুবই আকর্ষণীয় হয়। বিদ্যালয়ে ও ক্লাবে নাট্যাভিনয়, আবৃত্তি ও জলসার ব্যবস্থা থাকে। পরদিন ষষ্ঠী—প্রতিমা নিরঞ্জনের দিন। এদিন বিষন্ন মনে ছাত্র-ছাত্রীরা শোভাযাত্রা করে স্থানীয় নদী অথবা পুষ্করিণীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়।
প্রাকৃতিক অবস্থা
সরস্বতী পূজার সময় প্রাকৃতিক অবস্থা খুবই আনন্দদায়ক। এ সময় সাধারণত আবহাওয়া ভাল থাকে। শীতের শেষ এবং বসন্তের শুরুতে প্রকৃতি নব সাজে সজ্জিত হয়। দেবী সরস্বতীর বোধনের সময় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ার চাপও কম থাকে। সব মিলে সময়টি উৎসবের পক্ষে খুবই উপযোগী।
উপসংহার
বিদ্যাদেবীর আরাধনার মধ্যে আজকাল আর আগের মত নিষ্ঠা ও ভক্তির প্রাধান্য দেখা যায় না। উৎসবের নামে পথে-ঘাটে চাঁদার হিড়িক পড়ে যায়। মণ্ডপে মণ্ডপে মাইকে হিন্দি গানের সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ খুবই বিসদৃশ এবং দৃষ্টিকটু। সে কারণে আজকাল দেবী সরস্বতীর আরাধনা অনেকাংশে প্রাণহীন হয়ে উঠেছে। ছাত্র-ছাত্রী এবং ব্রতীদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার।
এই প্রবন্ধের সাহায্যে লেখা যায় :
1. ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসব
2. তোমার প্রিয় উৎসব