ভারতের জাতীয় সংগীত রচনা

ভারতের জাতীয় সংগীত রচনা

ভূমিকা

বিশ্বের সমস্ত দেশের নিজস্ব জাতীয় সঙ্গীত আছে। জাতীয় সঙ্গীত সাধারণত সভা সমিতির কাজের শুরুতে, কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের আরম্ভের অথবা সামরিক বিভাগের কোনো অনুষ্ঠানের আগে প্রারম্ভিক সঙ্গীত হিসাবে গীত হয়। আবার কখনো কখনো সভার শেষেও গীত হয়। দেশের সমস্ত অধিবাসী জাতীয় সঙ্গীতকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করে। আমাদের দেশেও জাতীয় সঙ্গীত গীত হয়। আমরাও তা শ্রদ্ধার সঙ্গে উৎসব অনুষ্ঠানের আরম্ভে অথবা শেষে উৎসবের অংশ হিসেবেই গ্রহণ করে থাকি।

জাতীয় সঙ্গীত ‘বন্দেমাতরম'

 পরাধীন ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ছিল ‘বন্দেমাতরম’। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে মাতৃসঙ্গীত হিসেবে সাহিত্যসম্রাট তা লিখেছিলেন। ‘বন্দেমাতরম্’ জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে পরাধীন ভারতবর্ষের মানুষকে স্বাধীনতা লাভে নানাভাবে উদ্দীপনা এবং প্রেরণা দিয়েছিল। ১৮৯৬ সালে জাতীয় কংগ্রেসের প্রকাশ্য অধিবেশনে এই গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে সর্বভারতীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ‘বন্দেমাতরম্’ ভারতের জনগণকে ‘এক জাতি, এক প্রাণ, একতা’র মহান মন্ত্রে উদ্বোধিত করেছিল।

জনগণমন অধিনায়ক

১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট আমাদের দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি স্বাধীন ভারতকে সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করবার আগে ‘বন্দেমাতরমের’ পরিবর্তে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা গানটি জাতীয় সঙ্গীতরূপে গৃহীত হয়। এর আগে ১৯১১ সালের ২৭শে ডিসেম্বর জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে এই সঙ্গীতটি গাওয়া হয়েছিল। জাতীয় সঙ্গীত যেখানে গান গাওয়া হোক উপযুক্ত মর্যাদা, শ্রদ্ধা এবং গাম্ভীর্যের সঙ্গে গাইতে হয়। এই সঙ্গীত ‘এক জাতি এক প্রাণ একতা'র শপথ সঙ্গীত। গানের স্তবকটি হল :
জনগণ-মন-অধিনায়ক জয় হে ভারত ভাগ্যবিধাতা।
পাঞ্জাব-সিন্ধু-গুজরাট-মারাঠা-দ্রাবিড়-উৎকল-বঙ্গ
বিন্ধ্য-হিমাচল-যমুনা-গঙ্গা-উচ্ছল-জলধিতরঙ্গ।
তব শুভ নামে জাগে, তব শুভ আশিস মাগে,
গাহে তব জয়গাথা।
জনগণ-মঙ্গল-দায়ক জয় হে ভারত-ভাগ্যবিধাতা।
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয়, জয় হে।।

উপসংহার

জাতীয় সঙ্গীত সংহতির সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয় বহন করে থাকে। জাতীয় সঙ্গীত মাতৃভূমির বন্দনাগান। দেশের সমস্ত মানুষ সর্বান্তঃকরণে এই গান গায়। তাই এই গান আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url