আমাদের দেশ ভারতবর্ষ রচনা
আমাদের দেশ ভারত রচনা
ভারত আমাদের দেশ। আমি একজন ভারতবাসী। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। ভারতের পাহাড়, পর্বত, নদনদী, শ্যামল বনভূমি, শস্যপ্রান্তর, গ্রাম-জনপদ আমার পরম প্রিয়। এই আকাশ আর বাতাস আমার জীবনকে ঘিয়ে রেখেছে। এর আকাশ কি সুন্দর! এর বাতাস কি প্রাণময়! আর এর মানুষ—তারা সকলেই আমার রক্ত, আমার ভাই। ভারতরাসী বলে আমি গর্বিত।
ভারতের ভূপ্রকৃতি
ভারতের ভূপ্রকৃতি অপরূপ। উত্তরের গিরিরাজ হিমালয় বরফের মুকুট পরে পূর্ব-পশ্চিমে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছে। দক্ষিণে ভারত মহসাগর শত তরঙ্গ মেলে সর্বদা নৃত্যরত। পূর্বে মিত্ররাষ্ট্র বাংলাদেশ ও ব্রহ্মদেশ এবং পশ্চিমে সহোদর রাষ্ট্র পাকিস্তান। কাশ্মীর হতে কন্যাকুমারিকা এবং পাঞ্জাব হতে আসাম—এই বিশাল ভূখণ্ডই ভারত, আমার মাতৃভূমি। কত বিচিত্র এর রূপ। কত বিশাল এর আয়োজন! হিমালয়ের রূপের শেষ নেই। কত বিচিত্র এর বনভূমি, কত বিচিত্র বৃক্ষলতা, জীবজন্তু, ফুল ও পাখির সমাবেশ সেখানে। ভারতের ঠিক মাঝখানে বিন্ধ্যাচল। পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত পূর্ব ও পশ্চিমঘাট পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলি যুগ যুগ ধরে মানুষ ও শস্যক্ষেত্রের তৃষ্ণা দূর করেছে। ভারতের নদীগুলির কী মনভুলানো নাম—গঙ্গা, সিন্ধু, ভাগীরথী, কৃষ্মা, কাবেরী, গোদাবরী, নর্মদা, তাপ্তী, যমুনা ইত্যাদি। এই রূপময় ভারতের দিকে চেয়ে কবি গেয়েছেন—
“ধ্যানগম্ভীর এই যে ভূধর নদী-জপমালাবৃত প্রান্তর
হেথায় নিত্য হেরো পবিত্র ধরিত্রীরে
এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে।”
ভারতের ইতিহাস
বহু শতাব্দী পূর্বে এখানে আবির্ভাব হয়েছিল মানুষের। তারাই ভারতের আদি অধিবাসী। পরবর্তীকালে আর্যরা এখানে এসে যে সভ্যতা বিস্তার করেছিল, তার নাম আর্যসভ্যতা। তারপর যুগে যুগে এখানে বহু মানুষের ধারা প্রবাহিত হয়ে এসেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ ফিরে গিয়েছে। আবার অনেকে ভারতীয় জীবনধারায় একাত্ম হয়ে গিয়েছে।
ভারতের একটিমাত্র জাতি
ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটির কাছাকাছি। এরা কেউ বাঙালি, কেউ বিহারি, কেউ পাঞ্জাবি, কেউ গুজরাটি, কেউ রাজস্থানি। এদের বেশভূষা, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা, আচার-আচরণ ভিন্ন ভিন্ন। ধর্মের দিক দিয়েও কেউ হিন্দু, কেউ মুসলমান, কেউ বৌদ্ধ, কেউ জৈন, কেউ শিখ, কেউ খ্রিস্টান। কিন্তু এদের একটিমাত্র পরিচয়, এরা ভারতীয়। এদের একটিমাত্র সংস্কৃতি, তা হল ভারতীয় সংস্কৃতি। এদের জাতীয় পাতাকা এক, এদের জাতীয় সংগীত এক।
উপসংহার
ভারতের প্রতিটি ধূলিকণা আমার কাছে পবিত্র। ভারতের প্রতিটি মানুষ আমার রক্ত, আমার ভাই। ভারতের জাতীয় নিশান সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বে, ভারতের জাতীয় সংগীত আমার বেদমন্ত্র। এর আকাশ, এর বাতাস আমার পরম প্রিয়। এখানে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত। কবির ভাষায়—
“সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।”
ame.akta.genis.parsina