জনসেবা রচনা
জনসেবা
আমরা সমাজে বাস করি। সমাজে বাস করতে হলে একের দুঃখে অপরকে দুঃখী হতে হয়। তাতে মানুষে মানুষে মনের মিল হয়। সমাজ সুখের হয়।
জনসেবা কী?
সমাজের প্রতিটি লোকের উন্নতির জন্য চেষ্টা করতে হয়। আবার সমাজের অন্যান্য অধিবাসীর উন্নতির কথাও চিন্তা করতে হয়। এ ধরনের চিন্তাকে যখন আমরা কাজে লাগাই তখনই সেটাকে বলে জনসেবা। জনসেবা কথাটার অর্থ অনেক ব্যাপক। আমাদের পরিবারে রোগ আছে, শোক আছে আবার আনন্দও আছে। পরিবারে যখন কারও কোন রোগ হয় তখন ঐ রোগীর সেবা সকলে মিলেই করে। তেমনি পাড়া-প্রতিবেশী কারও যদি কোন বিপদ-আপদ হয় তখন সেই বিপদে-আপদে পাড়ার আর পাঁচজন এসে বিপদগ্রস্ত প্রতিবেশীর পাশে দাঁড়ায়। এতে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি মনে জোর পায়। এ ভাবেই প্রথমে মানুষ জনসেবায় উৎসাহী হয়।
আমাদের দেশে জনসেবার আদর্শ
আমাদের দেশে জনসেবা চিরদিনই একটা পবিত্র এবং মহৎ কাজ বলে মনে করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই অতিথির সেবায় আমরা খুব আগ্রহী। বৌদ্ধযুগে দেশের নানা স্থানে জনসেবার উদ্দেশ্যে ‘সংঘ’ স্থাপিত হয়েছিল—তাতে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক পড়ুয়া, পর্যটক ও পথিক এসে বাস করতো। এখনও আমাদের দেশ ভারতবর্ষে বিভিন্ন তীর্থস্থানে ধর্মশালা আছে। সেখানে তীর্থযাত্রীরা বসবাস করে। জনসেবা আমাদের দেশে ধর্মের অঙ্গ হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে।
কীভাবে করা সম্ভব
দুর্ভিক্ষ, বন্যা, ভূমিকম্প, মহামারী প্রভৃতি দুর্যোগের সময় মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠান নানারকম সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসে। কেউ কেউ অন্ন-বস্ত্র দিয়ে, কেউ আবার ওষুধ-পত্র দিয়ে দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের সাহায্য করে। এসবই জনসেবামূলক কাজ।
গরিবদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষাবিস্তার, চিকিৎসার ব্যবস্থা, কু-সংস্কারের বিরুদ্ধে দেশের লোকের চেতনা বাড়ান এবং এসব কুসংস্কার দূর করার জন্য তাদের ঐক্যবদ্ধ করা—এসবই জনসেবা। এসব জনসেবার কাজ করে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী এবং সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা, স্কুল-কলেজের ছাত্ররা।
উপসংহার
ছাত্রজীবন থেকেই সহপাঠীদের বই দিয়ে, তাদের অভাবে সাহায্য দিয়ে আমরা জনসেবার কাজ হাতে কলমে শিখতে পারি। যে সমাজে এ ধরনের সেবামূলক কাজের ব্যবস্থা আছে, সে সমাজ সহজেই উন্নত হয়। সেখানকার মানুষ খুব উদার হয়, পরোপকারী হয়। দয়ালু ব্যক্তির সেবা দেখে নিষ্ঠুরের মনও সেবার কাজে উৎসাহী হয়। সম্প্রতি ভারত সরকারের N.S.S. বা জাতীয় সেবা প্রকল্প স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এই জনসেবার কাজটি অবসর সময়ে অথবা জরুরী সময়ে করার অভ্যাস তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তার ফলে শিক্ষার্থীর মনে এই সেবামূলক জ্ঞানের বিষয়টি ছাত্রাবস্থা থেকেই ঠাঁই পাচ্ছে।
এই প্রবন্ধের সাহায্যে লেখা যায় -
1. ছাত্রসমাজ ও জনসেবা রচনা
2. সমাজ ও জনসেবা রচনা