ক্রিয়াপদ কাকে বলে? ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ ও সমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে?
ক্রিয়াপদ কাকে বলে? ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ ও সমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে?
কোন কিছু কাজ করার অর্থ ক্রিয়া। ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যােগ করে যে পদের সৃষ্টি হয় তাই ক্রিয়াপদ।
যেমন—অমরেন্দ্র খেলিবে (খেলবে)।
তাপস কলেজে গেছে।
কল্লোল দৌড়ায়।
এই বাক্যগুলিতে ‘খেলিবে (খেলবে)’, ‘গেছে’ এবং ‘দৌড়ায়’ শব্দগুলি ভিন্ন ভিন্ন কাজের প্রকাশ ঘটিয়েছে এবং এদের দ্বারা কোন কিছু করা বােঝাচ্ছে। সেজন্যে এগুলি ক্রিয়াপদ।
ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ
ক্রিয়াকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—1. সমাপিকা ক্রিয়া,
2. অসমাপিকা ক্রিয়া।
সমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে?
যে ক্রিয়ার দ্বারা বাক্যের বক্তব্য শেষ হয় অর্থাৎ বাক্যের অর্থ বা ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ পায় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমন—ভবনাথ বিদ্যালয়ে গেল।
এখানে গেল ক্রিয়া পদের দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ প্রকাশ পেয়েছে। এই ‘গেল’ সমাপিকা ক্রিয়া।
অসমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে?
যে ক্রিয়ার দ্বারা বাক্যের অর্থ বা ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ পায় না তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমন—মনােজ তাড়াতাড়ি ভাত খাইয়া— এইটুকু বলার পর আর কিছু না বললে বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ হয় না। তাই যদি বলা হয় মনােজ তাড়াতাড়ি ভাত খাইয়া স্কুলে গেল,—তাহলে বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ প্রকাশ পায়। ফলে 'খাইয়া’ পদটি অসমাপিকা ক্রিয়া এবং ‘গেল’ পদটি সমাপিকা ক্রিয়া।
অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার
বাংলায় অসমাপিকা ক্রিয়া তিন প্রকারের হয় যথা-
1. ইয়া যােগে,
2. ইলে যােগে,
3. ইতে যােগে।
ক্রিয়ার কাল, পুরুষ ও দুটি বচনে অসমাপিকা ক্রিয়ার রূপ একই প্রকার থাকে।
1. ইয়া যােগে অসমাপিকা ক্রিয়া
যে বাক্যে অসমাপিকা ও সমাপিকা ক্রিয়ার কষ্ট একই ব্যক্তি, সেখানে ইয়া’ যােগে অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার হয়।
যেমন- আমি হাঁটিয়া/হেঁটে (অসমাপিকা) সেখানে গেলাম (সমাপিকা)।
রাত্রি জাগিয়া/ জেগে (অসমাপিকা) তার শরীর খারাপ হয়েছে (সমাপিকা)।
2. ইলে যােগে অসমাপিকা ক্রিয়া
যে বাক্যে অসমাপিকা ক্রিয়া সমাপিকা ক্রিয়ার। কর্তা পৃথক, সচরাচর সেখানে ইলে’ যােগে অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার হয়।
যেমন- স্বপন বাড়ি ফিরিলে আমরা যাইব/যাব।
তােমরা খাইলে আমরা বসিব।
3. ইতে যােগে অসমাপিকা ক্রিয়া
যখন অসমাপিকা ক্রিয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য, নিমিত্ত, সামর্থ্য, ঔচিত্য প্রভৃতি বােঝায় তখন ইতে’ যােগে অসমাপিকা ক্রিয়া হয়।
যেমন— বালিকাটি নাচিতে যাইতেছে।
আমাকে যাইতে হইবে।
সকর্মক ক্রিয়া ও অকর্মক ক্রিয়া
কর্মের বিচারে ক্রিয়াপদকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
1. সকর্মক ক্রিয়া,
2. অকর্মক ক্রিয়া
সকর্মক ক্রিয়া
কর্তা যে ক্রিয়া সম্পাদন করে সেই ক্রিয়ার বিষয়কে কর্ম বলে। ক্রিয়াপদকে কী বা কাকে এরূপ প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই ক্রিয়ার কর্ম।
যেমন—আমাকে কলম দাও।
এখানে কলমটি’ কর্ম, কারণ ক্রিয়াকে কি দাও প্রশ্নের উত্তরে কলমটি পাওয়া যায়। ফলে যে ক্রিয়ার কর্ম থাকে তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে।
অকর্মক ক্রিয়া
যে ক্রিয়ার কর্ম নেই তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। মেয়েটি নাচে; লােকটি হাঁটে। নাচে এবং হাঁটে’ ক্রিয়া দুটির কোন কর্ম নেই। তাই এগুলি অকর্মক ক্রিয়া।
কতগুলি সকর্মক ক্রিয়ার কোন কোন ক্ষেত্রে দুটি করে কর্ম থাকে। এই ক্ষেত্রে সেই ক্রিয়াকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমন - কল্যান বাবু আমকে বইখানা দিলেন। এখানে ‘দিলেন’ ক্রিয়ার দুটি কর্ম 'আমাকে’ এবং 'বইখান’। তাই দিলেন এখানে দ্বিকর্মক ক্রিয়া।
ক্রিয়াপদের মূল অংশকে কি বলে?
উঃ ধাতু
আরো পড়ুন-
1. ধাতু কাকে বলে ধাতু কত প্রকার ও কি কি?
2. বিভক্তি কাকে বলে বিভক্তি কত প্রকার ও কি কি?
3. কারক কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি?
4. পুরুষ কাকে বলে পুরুষ কত প্রকার ও কি কি?
5. লিঙ্গ কাকে বলে? লিঙ্গ কত প্রকার ও কি কি?