আরবের অধিবাসীদের সামাজিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক জীবনের পরিচয় দাও।
আরবের অধিবাসীদের সামাজিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক জীবনের পরিচয় দাও।
উত্তরঃ আরবের অধিবাসীদের সমাজ জীবনঃ আরবদের কয়েকটি জাতি পরিবার নিয়ে এক একটি কৌম গড়ে ওঠে। প্রতি কৌমের একজন করে নেতা ছিল। তাকে শেখ বলা হত। এক কৌমের সঙ্গে অপর কৌমের ঝগড়াঝাটি ও সংঘর্ষ প্রায়ই লেগে থাকত। মাঝে মাঝে ওই সংঘর্ষ কয়েক বছর ধরে চলত। দেশে কোনাে শান্তি-শৃঙ্খলা ছিল না। সমাজে হত্যার বদলে হত্যার নীতিই প্রচলিত ছিল। তাদের মধ্যে দেশ ও জাতিতে ভালােবাসার কোনাে চেতনাই ছিল না। পুরুষের মধ্যে বহু বিবাহ প্রচলিত ছিল। নারীর কোনাে মর্যাদা ছিল না। নারী ও পুরুষ খুব উচ্ছঙ্খল জীবন যাপন করত।
আরবদের ধর্মজীবন
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে আরবরা বহু দেবদেবীর উপাসনা করত। মরুভূমির রুদ্র মূর্তিকে তারা শয়তান বা জিন বলত। অসংখ্য দেবদেবীর প্রধান ছিলেন মক্কার কাবা মন্দিরের দেবদেবী। বেদুইনদের পৌত্তলিক, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, গাছপালা, কাকর, নুড়ি উপাস্য ছিল। মক্কার মন্দিরে ছিল একখানা চতুষ্কোণ কালাে পাথরের কাবা। আরববাসীদের কাছে ছিল তা পবিত্র। তারা ভয় ও অন্ধভক্তির সঙ্গে এই কাবার পুজো করত। মক্কা ছিল তাদের কাছে এক পরম পুণ্যক্ষেত্র। বসন্তকালের চার মাস আরববাসীরা সব শত্রুতা ভুলে গিয়ে মক্কায় এসে উট, মেষ প্রভৃতি বলি দিয়ে
কাবা মন্দিরে পুজো দিত।
আরবদের অর্থনৈতিক জীবন
আরবরা বহু প্রাচীনকাল থেকেই ব্যাবসা- বাণিজ্য করত। মালপত্র আদান-প্রদানে উটই ছিল একমাত্র অবলম্বন। মক্কা ও মদিনা শহর দুটি কালক্রমে বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এই শহর দুটির বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বাণিজ্য উপলক্ষে আরব বণিকেরা বিদেশেও যেত। এই উপলক্ষে তাদের সঙ্গে খ্রিস্টান ও পারস্য দেশেরও যােগাযােগ স্থাপিত হয়। ইহুদি, খ্রিস্টান ও পারসিক ধর্মমতের সঙ্গে তাদের পরিচয় ঘটে। এমনকি সমুদ্রপথে ভারতের পশ্চিম উপকূলের সঙ্গেও তাদের ব্যাবসাবাণিজ্য চলত। আরব সাগর অঞ্চলে তাদের আধিপত্য ছিল বেশি।
আরো পড়ুন-
2. হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর মদিনা জীবন
3. কার্ডোভা কী জন্যে বিখ্যাত