অতীশ দীপঙ্কর বিখ্যাত কেন? ভারতীয় সভ্যতা প্রসারে অতীশ দীপঙ্করের ভূমিকা কেমন ছিল?
অতীশ দীপঙ্কর বিখ্যাত কেন?
অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ৯৮০ খ্রিস্টাব্দের পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন, তাঁর পূর্বনাম ছিল চন্দ্রগর্ভ। ধর্মপাল প্রতিষ্ঠিত ওদন্তপুরী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ শেষে অধ্যক্ষ বৌদ্ধপণ্ডিত শীলরক্ষিতের কাছে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হন এবং প্রচলিত নামে পরিচিত হন।
উনিশ বছর বয়সে অতীশ দীপঙ্কর মগধের ভাগলপুরের কাছে বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হন। দীর্ঘদিন এই পদে থাকার পর তিব্বতের রাজা শেষ হোড-এর আমন্ত্রণে তিব্বত যান এবং এখানে ১৩ বছর মহাযান বৌদ্ধধর্ম প্রচারের পর ১০৫০ খ্রিস্টাব্দে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিব্বতে থাকাকালীন অতীশ দীপঙ্কর বৌদ্ধধর্মকে ভিত্তি করে প্রায় ২০০টি গ্রন্থ লেখেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থের নাম ‘বজ্রযান সাধন’।
ভারতীয় সভ্যতা প্রসারে অতীশ দীপঙ্করের ভূমিকা কেমন ছিল?
উত্তরঃ একাদশ শতাব্দীতে তিব্বতীয় রাজার আমন্ত্রণে মগধের দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান এবং আরও অনেক বৌদ্ধ পণ্ডিত তিব্বতে উপস্থিত হন। দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান সেই আমলের শ্রেষ্ঠ বৌদ্ধ পণ্ডিত ছিলেন। নেপালের মধ্য দিয়ে তিব্বত সীমান্তে উপনীত হলে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে তিব্বতিরা বিপুল সংবর্ধনা জানায়। দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতে ‘অতীশ’ বা ‘অতীশ দীপঙ্কর’ নামে পরিচিত হন। তিনি তিব্বতের বিভিন্ন স্থানে, বিশুদ্ধ হীনযান বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন। প্রায় তেরাে বছর তিব্বতে থেকে অতীশ দীপঙ্কর প্রায় দু’শ বৌদ্ধগ্রন্থ রচনা করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে গৌতমবুদ্ধের অবতাররূপে পূজিত হন। তিব্বতের রাজধানী লাসার অনতিদূরে তাঁর সমাধিস্থান তিব্বতি বৌদ্ধদের একটি তীর্থস্থান, ধর্মের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সভ্যতা-সংস্কৃতিও তিব্বতে প্রভাব বিস্তার করেছিল। ফলে তিব্বত ভারতীয় সভ্যতার অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
আরো দেখুন-
2. ভারতের সঙ্গে চীনের ধর্ম সংক্রান্ত যোগাযোগ কিভাবে গড়ে উঠেছিল?