একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমােজোমের অঙ্গ সংস্থানিক গঠন সংক্ষেপে লেখাে।
ইউক্যারিওটিক ক্রোমােজোমের অঙ্গ সংস্থানিক
উঃ একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমােজোমের অঙ্গ সংস্থানিক গঠন: প্রতিটি ক্রোমােজোমে দুটো সাপের মতাে আকারের পরস্পর প্যাচানাে সূক্ষ্ম তন্তু থাকে। এগুলাে কোশ বিভাজনের সময় পরস্পর আলাদা হয়ে যায় এবং এক একটা আলাদা দন্ডাকার বা সূত্রাকার অংশে পরিণত হয়, এদের প্রত্যেকটি অংশকে ক্রোমাটিড বলে। প্রতিটি ক্রোমাটিড দৈর্ঘ্য বরাবর আরও দুটি সূক্ষ্ম তন্তু নিয়ে গঠিত, এদের ক্রোমানিমা বলে। ক্রোমানিয়ায় রাসায়নিক পদার্থের ঘনত্ব সবক্ষেত্রে একই
রকম নয়। কোনাে কোনাে স্থানে এই ঘনত্ব খুব বেশি হয়। এই বেশি ঘনত্বযুক্ত অংশগুলিকে ক্রোমােমিয়ার বলে। দুটি ক্রোমােমিয়ারের মধ্যবর্তী স্থানকে আন্ত:ক্রোমােমিয়ার বলে। এ ছাড়া প্রতিটি ক্রোমােজোমে কমপক্ষে একটি গােলাকার স্বচ্ছ অংশ দেখা যায়, যাকে সেন্ট্রোমিয়ার বা কাইনেটোমাের বলে। সেন্ট্রোমিয়ারের উভয়দিকে অবস্থিত ক্রোমােজোমের অংশকে ক্রোমােজোমের বাহু বলে। সেন্ট্রোমিয়ার দ্বারাই ক্রোমােজোমের ক্রোমাটিড দুটি পরস্পরের সাথে দৃঢ়ভাবে যুক্ত থাকে এবং অ্যানাফেজ দশায় ক্রোমােজোমের এই অংশের সাথে স্পিন্ডল তন্তু যুক্ত হয়। সকল ক্রোমােজোমে সেন্ট্রোমিয়ায় ক্রোমােজোমের একই জায়গায় অবস্থান করে না। তবে প্রতিটি ক্রোমােজোমের একই জায়গায় অবস্থান করে না। তবে প্রতিটি ক্রোমােজোমে এর অবস্থান সুনির্দিষ্ট। ক্রোমােজোমে সেন্ট্রোমিয়ারের উপস্থিতির জন্য একটি খাঁজের সৃষ্টি হয়, তাকে মুখ্য খাঁজ বলে। ক্রোমােজোমকে সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়-
(ক) সেন্ট্রোমিয়ার ক্রোমােজোমের প্রান্তসীমায় থাকলে তাকে টেলােসেন্ট্রিক,
(খ) প্রান্তসীমার কাছাকাছি থাকলে তাকে অ্যান্ডােসেন্ট্রিক,
(গ) মধ্যভাগে থাকলে তাকে মেটাসেট্রিক এবং
ঘ) মধ্যভাগের কাছাকাছি থাকলে তাকে সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমােজোম বলে। অ্যানাফেজ চলাকালে এদের দেখতে যথাক্রমে ইংরেজি বর্ণমালার I, J, V এবং L অক্ষরের ন্যায় হয়। মুখ্য খাঁজ ব্যতীত ক্রোমােজোমে অন্য কোনও খাঁজ থাকলে তাকে গৌণ খাঁজ বলে। ক্রোমােজোমের গৌণ খাঁজের পরবর্তী অংশকে স্যাটেলাইট বলে।