হরমোন কাকে বলে ? হরমোনের বৈশিষ্ট্য ও কাজ এবং হরমোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
হরমোনের সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
হরমোন কাকে বলে?
উঃ যে জৈব রাসায়নিক পদার্থ জীবদেহের বিশেষ ধরনের নির্দিষ্ট কতকগুলাে কোষ বা কোষসমষ্টি বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে উৎপত্তি লাভ করে বিশেষ উপায়ে বাহিত হয়ে দূরবর্তী কোন অঞ্চলের কোষগুলাের কার্যকারিতাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, তাকে হরমােন বলে।
হরমােন প্রধানত প্রােটিন, অ্যামাইনাে-অ্যাসিড, স্টেরয়েড ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত।
হরমোনের বৈশিষ্ট্য
1. প্রকৃতি : হরমোন একপ্রকার প্রোটিন ধর্মী বা স্টেরয়েড বা অ্যামাইনো ধর্মী জৈব রাসায়নিক পদার্থ।
2. পরিণতি: হরমোন জৈব অণু অনুঘটকের মতো কাজ করে কিন্তু কাজের পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং দ্রুত সেই স্থান থেকে বের হয়ে যায়।
3. সঞ্চয়: হরমোন শুধুমাত্র নিঃসৃত স্থানেই সঞ্চিত হয়।
4. পরিমাণ: হরমোন খুব অল্প মাত্রায় কাজ করে কিন্তু কাজের স্থায়ীকাল হয় বহুদিন পর্যন্ত। হরমোন যদি প্রয়োজনের তুলনায় কম বা বেশি মাত্রায় ক্ষরিত হলে জীবদেহে নানা ধরনের অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়।
5. সমন্বয়কারী: জীবদেহে হরমোন রাসায়নিক সমন্বয়কারী (chemical co- ordinator) হিসেবে কাজ করে।
6. বার্তাবহ: জীবদেহের কোষে কোষে হরমোন রাসায়নিক বার্তা প্রেরণ করে এর জন্য হরমোন কে রাসায়নিক দূত ( Chemical Messenger) বলে।
7. দ্বৈত নিয়ন্ত্রক: জীবদেহে কোন কোন কাজের ক্ষেত্রে কিছু হরমোন কাজে সাহায্য করে আবার কিছু হরমোন কাজে বাধা দেয় এইভাবে হরমোন জীবদেহে দ্বৈত নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।
হরমোনের প্রকারভেদ
রাসায়নিক ধর্ম অনুসারে বিভিন্ন রকমের হরমোন হতে পারে -
👉 প্রোটিন ধর্মী: গ্রোথ হরমোন ( S.T.H), প্যারা হরমোন, গ্লুকাগন ইত্যাদি প্রোটিন ধর্মী হরমোনের উদাহরণ।
👉 অ্যামাইনো ধর্মী: অ্যাড্রিনালিন এবং থাইরক্সিন ইত্যাদি অ্যামাইনো ধর্মী হরমোনের উদাহরণ।
👉 পেপটাইড ধর্মী: ইনসুলিন, ভেসোপ্রেসিন ইত্যাদি পেপটাইড ধর্মী হরমোনের উদাহরণ।
👉 পলিপেটাইড ধর্মী: ACTH, থাইমোসিন।
👉 স্টেরয়েড ধর্মী: অ্যালডোস্টেরন, টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন।
👉 নাইট্রোজেন ঘটিত জৈব অম্ল: অক্সিন।
👉 নাইট্রোজেন বিহীন জৈব অম্ল: জিব্বেরেলিন।
👉 নাইট্রোজেন ঘটিত জৈব ক্ষার: কাইনিন।
হরমোনের কাজ
1. জীবদেহের কোষে হরমোন রাসায়নিক সমন্বয়কারী হিসাবে কাজ করে।
2. জীবদেহে হরমোন কোষ বিভাজন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
3. জীবদেহের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হরমোন সাহায্য করে।
4. জীবদেহের যৌনাঙ্গের পরিস্ফুটন এবং যৌন বৈশিষ্ট্য গুলির প্রকাশে হরমোন সহায়তা করে।
হরমােনকে রাসায়নিক সমন্বয়কারী বলে কেন?
উত্তর: হরমােনকে জীবদেহের রাসায়নিক সমন্বয়সাধক বলা হয় কারণ হরমােন জীবদেহের নিদিষ্ট সন্ধান থেকে উৎপন্ন হয়ে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ দেহের কোশগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে ও কোশের বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে এইভাবে হরমােন জীবদেহে রাসায়নিক সংযোগ গঠন করায় হরমোন কে রাসায়নিক সমন্বয়কারী বলে।
হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য
হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের সাদৃশ্য: হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্র উভয়়েই প্রাণীদেহে সমন্বয়সাধক রূপে কাজ করে।
হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের বৈসাদৃশ্য বা হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য | হরমোন | স্নায়ুতন্ত |
---|---|---|
1.কর্মস্থল ও কাজের প্রকৃতি | 1.উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে হরমোন রাসায়নিক সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করে। | 1. স্নায়ুতন্ত্র প্রাণীদেহে ভৌত সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করে। |
2. কর্মক্ষমতা | 2. হরমোনের কাজ ধীরগতিতে কিন্তু স্থায়ীকাল বহুদিন পর্যন্ত থাকে। | 2. স্নায়ুতন্ত্রের কাজ দ্রুতগতিতে কিন্তু তাৎক্ষণিক। |
3. পরিণতি | 3. ক্রিয়ার পর হরমোন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। | 3. প্রিয়ার পর স্নায়ুতন্ত্রের কোন গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন হয় না। |
হরমোন ও উৎসেচকের পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য | হরমোন | উৎসেচক |
---|---|---|
1. উৎপত্তিস্থল | 1. কেবলমাত্র তরুণ কোশে বা অনাল গ্রন্থির কোশে হরমোন উৎপন্ন হয়। | 1. প্রায় সবরকম সজীব কোষে উৎসেচক উৎপন্ন হয়। |
2. পরিবহন | 2. অনাল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন সরাসরি রক্তে মিশে যায় এবং রক্ত বা লসিকা দ্বারা বাহিত হয়। | 2. সনাল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত উৎসেচক নালিপথ বাহিত হয়। |
3. কাজের প্রকৃতি | 3. হরমোন জৈব অনুঘটক হিসেবে কাজ করে এবং কাজের পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। | 3. উৎসেচক জৈব অনুঘটক রূপে কাজ করে এবং কাজের পর অপরিবর্তিত থাকে। |
4. কর্মস্থল | 4. হরমোন উৎপত্তিস্থলে কি কাজ করে না উৎস স্থল থেকে দূরের স্থানে কাজ করে। ব্যতিক্রম - স্থানীয় হরমোন। | 4. উৎসেচক উৎসস্থলে এবং অন্য জায়গায় কাজ করতে পারে। |
5. পরিণতি | 5. হরমোন রাসায়নিক দূত বা রাসায়নিক বার্তাবহ রূপে কাজ করে। | 5. উৎসেচক রাসায়নিক বার্তাবাহ বা রাসায়নিক দূত রূপে কাজ করে না। |
উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে হরমোনের ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তর : হরমােনের প্রভাব : উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে হরমােন এক উল্লেখযােগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। অক্সিন, জিব্বেরেলিন, কাইনিন প্রভৃতি উদ্ভিদ হরমােন উদ্ভিদের কোশ বিভাজন, কোশের পরিস্ফুরণ ঘটিয়ে থাকে। উদ্ভিদের অঙ্কুরােদগম,
মূলােদ্গম, মুকুলােদ্গম প্রভৃতির জন্য হরমােন দায়ী।
কৃষিক্ষেত্রে উদ্ভিদ হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ
বর্তমানে কৃষিক্ষেত্রে কম খরচে বেশি পরিমাণে ফল পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম হরমোন ব্যবহার করা হয়। কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ করে বীজবিহীন ফল উৎপাদন, আগাছা নির্মূল করতে ক্ষতস্থান পূরণ ও শাখা কলমে মূল সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। যেমন কৃত্রিম হরমোন এরমধ্যে ইনডোল বিউটারিক অ্যাসিড (IBA), ন্যাপথালিন অ্যাসিটিক অ্যাসিড (NAA), ডাইক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড (2, 4-D) ইত্যাদি।
এইসব কৃত্রিম হরমোন এর কাজ ও গুরুত্ব নিচে দেওয়া হল:
1. বীজবিহীন ফল উৎপাদন : পরাগমিলন বা নিষেক ছাড়ায় ডিম্বাশয়ে কৃত্রিম অক্সিন হরমোন প্রয়োগ করে আয়তনের বড় বীজবিহীন ফল উৎপাদন করা হয় এই পদ্ধতিকে পার্থেনোকার্পি বলে। কৃত্রিম অক্সিন হরমোন যেমন - ইনডোল বিউটারিক অ্যাসিড (IBA), ইন্ডোল অ্যাসিটিক অ্যাসিড ( IAA) বিভিন্ন ফলে ( পেঁপে পেয়ারা খেজুর কলা ইত্যাদিতে) এই কৃত্রিম অক্সিন হরমোন প্রয়োগ করা হয়।
2. শাখা কলমে মূল সৃষ্টি: শাখা কলমে খুব তাড়াতাড়ি মূল সৃষ্টি করার জন্য নানান ধরনের কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ করা হয়। গোলাপ, জবা ফুল গাছ এবং আম, পেয়ারা , লেবু ফলের গাছের শাখা কলম তৈরি করার সময় বিশেষভাবে IBA, NAA ব্যবহার করা হয়।
3. আগাছা নির্মূল: কৃষি ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের আগাছা বা অবাঞ্ছিত উদ্ভিদ নির্মূল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম হরমোন ব্যবহার করা হয়।
যেমন- ডাইক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড (2, 4-D) , মিথাইল ক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড ( MCAA).
4. ক্ষতস্থান পূরণ: বিভিন্ন গাছের ( চা, পাতাবাহার আপেল, নাশপাতি) ডাল ছাঁটাই পর গাছগুলি কাটা অংশের ক্ষতস্থানে মেরামত করার জন্য কৃত্রিম অক্সিন প্রয়োগ করা হয় যাতে ক্ষতস্থানে রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত না হতে পারে। যেমন - IAA
5. উদ্ভিদের অপরিণত অঙ্গের মোচন রোধ: উদ্ভিদের নানান অপরিণত অনেকের অকাল মোচন রোধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ করা হয় যেমন - ডাইক্লোরোফেনক্সি অ্যাসিটিক অ্যাসিড (2, 4-D) , ন্যাপথালিন অ্যাসিটিক অ্যাসিড (NAA)।
6. অঙ্কুরোদগম ত্বরান্বিত করা: বীজের সুপ্ত অবস্থায় ভেঙে দ্রুত অঙ্কুরোদগম করানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম জিব্বেরেলিন হরমোন প্রয়োগ করা হয়।
7. ফল ধরতে সহায়তা করা: বিভিন্ন ধরনের গাছের ( আনারস, লেবু, আপেল) ফল ধরার ধারণক্ষমতা কে ত্বরান্বিত করার জন্য বিভিন্ন কৃত্রিম হরমোন গাছে দেওয়া হয়।
8. ফলের বৃদ্ধি ও পরিপক্কতা: বিভিন্ন ধরনের ফলের আয়তন বৃদ্ধি ও পরিপক্কতা বজায় রাখতে IBA বা 2, 4-D নামক কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ করা হয়।
9. পুষ্প পরিস্ফুটনের নিয়ন্ত্রণ : উদ্ভিদের পুষ্প মুকুলের পরিস্ফুটন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ করা হয় । যেমন জিব্বেরেলিন হরমোন প্রয়োগ করে দ্বিবর্ষজীবী উদ্ভিদ এর প্রথম বছরে ফুল ধরানো সম্ভব।
10. জরা রোধ: উদ্ভিদের জরা রোধ করার জন্য কাইনিন হরমোন প্রয়োগ করা হয়।
চলনে অক্সিন হরমােনের ভূমিকা লেখো।
উঃ অক্সিন হরমােন উদ্ভিদের আলােকবৃত্তি, অভিকর্যবৃত্তি প্রভৃতি দিগনির্ণীত বক্ৰচলন নিয়ন্ত্রণ করে। আলাের উৎসের বিপরীত দিকে অধিক পরিমাণে সঞ্জিত হয়। ফলে এই অংশে ভাজক কলার কোশগুলির দ্রুত বিভাজন ঘটে এবং উদ্ভিদের ওই অংশটি আলাের উৎসের দিকে বেঁকে যায়। মূলের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত পদ্ধতিতে বৃদ্ধি সম্পন্ন হয়।
অক্সিন হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ
কৃষি ক্ষেত্রে অক্সিন হরমোন যে ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়-
1. বীজবিহীন ফল উৎপাদনে: কৃষিক্ষেত্রে বীজবিহীন ফল উৎপাদন এবং আয়তনে বড় করার জন্য অক্সিন হরমোন প্রয়োগ করা হয়। বীজবিহীন ফল যেমন- টমেটো ,বেগুন, লঙ্কা ,কুমড়ো ,পেঁপে তরমুজ ইত্যাদি।
2. কলম তৈরি: বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের গাছের কলম তৈরি করার জন্য বা দ্রুত মুকুল সৃষ্টি করার জন্য অক্সিন হরমোন প্রয়োগ করা হয়।
3. আগাছা দমন: কৃষি ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনে আগাছা দমনের জন্য কৃত্রিম অক্সিন যেমন 2,4 -D ব্যবহার করা হয়।
4. অকাল পতন রোধ: বিভিন্ন ধরনের গাছের পাতা ফুল ও ফল ঝরেপড়া রোধ করার জন্য কৃত্রিম অক্সিন ব্যবহার করা হয়।
5. ক্ষত নিরাময়: গাছ কাটার পর ওই অঞ্চলে ক্ষতস্থানে পূরণের জন্য কৃত্রিম অক্সিন প্রয়োগ করা হয়।
জিব্বেরেলিন
1926 খ্রিস্টাব্দে জাপানী বিজ্ঞানী কুরোসাওয়া জিব্বেরেলা ফুজিকুরই ( Gibberella fujikuroi) নামক এক রকম ছত্রাক থেকে জিব্বেরেলিন হরমোন প্রথম আবিষ্কার করেন। জিব্বেরেলিন এর রাসায়নিক নাম জিব্বেরেলিক অ্যাসিড। এই হরমোনটি এক রকমের টারপিনয়েড জাতীয় নাইট্রোজেন বিহীন জৈব অম্ল। এই হরমোন জাইলেম ও ফ্লোয়েম কলার মাধ্যমে উর্ধ ও নিম্ন উভয় দিকে প্রবাহিত হয়।
জিব্বেরেলিন এর উৎস
জিব্বেরেলিন হরমোন সবথেকে বেশি উৎপন্ন হয় উদ্ভিদের পরিপক্ক বীজে। তাছাড়া অঙ্কুরিত চারা গাছে, বীজের বীজপত্র, মুকুল ও পাতার বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে এই হরমোন পাওয়া যায়।
জিব্বেরেলিন হরমোন এর কাজ
জিব্বেরেলিনের প্রধান কাজ গুলি হল-
1. খর্বাকার উদ্ভিদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি ঘটাতে জিব্বেরেলিন হরমোন সাহায্য করে।
2. সমস্ত রকম উদ্ভিদের ফুল ফোটাতে জিব্বেরেলিন হরমোন সাহায্য করে।
3. জিব্বেরেলিন হরমোন মুকুল এবং বীজের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করতে সাহায্য করে।
4. জিব্বেরেলিন হরমোন বীজ হীন ফল উৎপাদন এবং পাতা ফুল ও ফলের আয়তন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
5. পুষ্পমুকুল ও কাক্ষিক মুকুল এর পরিস্ফুটন ঘটাতে জিব্বেরেলিন সাহায্য করে।
6. উদ্ভিদের বিভিন্ন ধরনের ফল গঠনে যেমন আপেল, আঙ্গুর, নাসপাতি জিব্বেরেলিন খুবই কার্যকর।
7. উন্নত উদ্ভিদের লিঙ্গ নির্ধারণে জিব্বেরেলিন বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
8. জিব্বেরেলিন হরমোন বীজের মধ্যে অ্যামাইলেজ নামক শ্বেতসার বিশিষ্ট কারী উৎসেচকের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
সাইটোকাইনিন
কাইনিন হলো পিউরিন জাতীয় নাইট্রোজেনঘটিত গঠিত ক্ষারীয় জৈব পদার্থ। বিভিন্ন বিজ্ঞানি বিভিন্ন রকম হরমোন নামকরণ করেন সাইটোকাইনিন, কাইনেটিন, ফাইটোকাইনিন ইত্যাদি। কাইনিন সাধারণত কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন নিয়ে গঠিত।
সাইটোকাইনিন এর উৎস
উদ্ভিদের ফলে ও সস্যে বেশি পরিমাণে কাইনিন থাকে। ডাবের জলে, ভুট্টার সস্যে ও নারকেলের দুধে কাইনিন পাওয়া যায়।
সাইটোকাইনিন এর কাজ
সাইটোকাইনিন এর গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলি হল-
1. উদ্ভিদের কোষ বিভাজনে কাইনিন সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।
2. সাইটোকাইনিন হরমোন বিভিন্ন উদ্ভিদের বিচ্ছিন্ন পাতায় ক্লোরোফিল বিলম্বিত করে।
3. সাইটোকাইনিন কোষের বৃদ্ধি ঘটাতে এবং উদ্ভিদের জরা রোধ করতে সহায়তা করে।
4. সাইটোকাইনিন কলম এর ক্ষেত্রে মূলের বৃদ্ধি এবং মুকুল উৎপাদনে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে।
5. সাইটোকাইনিন কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ও পরিস্ফুটন এবং অগ্রমুকুলের অবাদ বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।
বহিঃক্ষরা ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য | বহিঃক্ষরা বা সনাল গ্রন্থি | অন্তঃক্ষরা বা অনাল গ্রন্থি |
---|---|---|
1. নালির উপস্থিতি | 1. বহিঃক্ষরা গ্রন্থীর নালী থাকে। | 1. অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি নালি থাকে না। |
2. উৎপত্তির প্রক্রিয়া | 2. বহিঃক্ষরা গ্রন্থীর ক্ষরণ নালীর মাধ্যমে গ্রন্থির বাইরে আসে। | 2. অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষরণ গ্রন্থির বাইরে নিঃসৃত হয় না, ব্যাপন প্রক্রিয়া রক্তে মিশে যায়। |
3. নিঃসৃত বস্তু | 3. বহিঃক্ষরা গ্রন্থীর ক্ষরণ বিভিন্ন রকমের হতে পারে যেমন- পাক গ্রন্থি নিঃসৃত পাক রস, সিবেসিয়াস গ্রন্থি নিঃসৃত সিবাম, ঘর্মগ্রন্থি নিঃসৃত ঘাম। | 3. অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়। |
4. উদাহরণ | 4. যকৃৎ, লালাগ্রন্থি, ঘর্মগ্রন্থি ইত্যাদি বহিঃক্ষরা গ্রন্থির উদাহরণ। | 4. থাইরয়েড, পিটুইটারি, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি ইত্যাদি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির উদাহরণ। |
মানবদেহে বিভিন্ন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির অবস্থান এবং ক্ষরণ
অনাল গ্রন্থি | অবস্থান | নিঃসৃত প্রধান হরমোন |
---|---|---|
পিটুইটারি গ্রন্থি | মস্তিষ্কের মূলদেশে অবস্থিত। | GTH, TSH, STH, ACTH Or GH |
থাইরয়েড | ট্রাকিয়ার দুপাশে। | থাইরক্সিন। |
আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স | অগ্ন্যাশয় এর বিটা কোষ। | ইনসুলিন। |
অ্যাড্রিনাল | প্রতিটি বৃক্কের ওপর। | অ্যাড্রেনালিন |
ইনসুলিন
রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে ইনসুলিন হরমোন এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মধুমেহ রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক সময় চামড়ার নিচে কৃত্রিম ইনসুলিন ইঞ্জেক্ট করা হয়।
ইনসুলিনের উৎস
ইনসুলিন হরমোন অগ্নাশয় অবস্থিত আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স নামক অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির থেকে নিঃসৃত হয়। অগ্নাশয়কে মিশ্রগ্রন্থি বলে কারণ অগ্নাশয় অন্তঃক্ষরা ও বহিঃক্ষরা উভয় গ্রন্থির সংমিশ্রণে গঠিত।
ইনসুলিনের কাজ
ইনসুলিনকে অ্যান্টিডায়াবেটিক হরমোন বলা হয়। এটি মানবদেহে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করে থাকে যেমন-
1. ইনসুলিন এর প্রধান কাজ হল রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখা যেমন রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা কমিয়ে স্বাভাবিক করা। [ * রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিস মেলিটাস বা মধুমেহ রোগ হয় এবং ADH হরমোনের অভাবে ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস বা শর্করা বিহীন বহুমূত্র রোগ হয়। ]
2.ইনসুলিন কোশে গ্লুকোজ গ্রহণে সহায়তা করে অর্থাৎ কলা কোশে গ্লুকোজ বিশ্লেষণ বৃদ্ধি করে।
3. ইনসুলিন যকৃত ও পেশি কোষে গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেনের পরিণত করে জমা রাখে।
4. ইনসুলিন গ্লুকোজকে পাইরুভিক অ্যাসিডে পরিণত করতে সাহায্য করে।
5. প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি থেকে ইনসুলিন গ্লুকোজ উৎপাদনে বাধা দেয়।
থাইরক্সিন
থাইরক্সিন এর উৎস: থাইরক্সিন থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় এটি গ্রীবাদেশে ট্রাকিয়া দুপাশে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ ট্রাকিয়াল-রিং সামনে অবস্থিত।
প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের থাইরয়েড গ্রন্থির ওজন হয় 20- 35 gm.
থাইরক্সিন এর কাজ
মানবদেহে থাইরক্সিন বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করে থাকে-
1. মানব দেহের বৃদ্ধি, বিপাক নিয়ন্ত্রণ, মানসিক পরিপূর্ণতা এবং যৌন লক্ষণ প্রকাশ্যে থাইরক্সিন সাহায্য করে।
2. মানবদেহে হৃদগতি বৃদ্ধি পায় থাইরক্সিন এর প্রভাবে।
3. থাইরক্সিন মৌল বিপাককে ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং থাইরক্সিন এর প্রভাবে মৌল বিক্রিয়ার হার বৃদ্ধি পায়। 1 মিলিগ্রাম থাইরক্সিন B.M.R কে 1000 ক্যালরিতে বাড়িয়ে দেয়।
4. মানবদেহের অন্ত্রে গ্লুকোজের শোষণ ক্ষমতা বাড়াতে থাইরক্সিন সহায়তা করে। থাইরক্সিন এর জন্যে যকৃৎ থেকে গ্লুকোজেন মুক্ত হয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
5. অস্থি থেকে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস কে মুক্ত করতে সহায়তা করে থাইরক্সিন।
6. থাইরক্সিন এর প্রভাবে মূত্রে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
7. রক্তকণিকার ক্রমপরিণতিতে থাইরক্সিন সহায়তা করে।
8. মানব দেহে অক্সিজেন সংযোগ ক্রিয়া বাড়াতে থাইরক্সিন সাহায্য করে।
9. স্তনগ্রন্থিতে দুধের ক্ষরণ বাড়াতে থাইরক্সিন সাহায্য করে।
10. ব্যাঙাচির রুপান্তরে এবং সরীসৃপ ও পক্ষী জাতীয় প্রাণীদের নির্মোচনে থাইরক্সিন সাহায্য করে।
থাইরয়েড গ্রন্থির অধিক ক্ষরণের ফল
থাইরক্সিন এর অধিক ক্ষরণের ফলে মানব দেহে গয়টার বা গলগন্ড বৃদ্ধি বা বিস্ফারিত চোখসহ গয়টার রোগ হয়।
থাইরক্সিনের কম ক্ষরণের ফল
থাইরক্সিন কম ক্ষরণের ফলে শিশুদের ক্রেটিনিজম এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মিক্সিডিমা রোগ হয়। ক্রেটিনিজম রোগটি হলো শিশুদের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়, শিশুরা জড়বুদ্ধি সম্পন্ন হয়, উদর বড় হয়, যৌন লক্ষণ প্রকাশিত হয় না এবং B.M.R হ্রাস পায়।
মিক্সিডিমা রোগটি হলো চোখ মুখ ফোলা ফোলা দেখায়, দেহের রোম ও চুল উঠে যায়, যৌন লক্ষণ হ্রাস পায়, গলার স্বর মোটা হয়, B.M.R কমে যায়, স্মৃতিভ্রংশ ঘটে, এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায় ইত্যাদি।
উদ্ভিদ ও প্রাণী হরমোনের পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য | উদ্ভিদ হরমোন | প্রাণী হরমোন |
---|---|---|
1. উৎপত্তি | 1. উদ্ভিদের কান্ডের অগ্রভাগ ও মূলের অগ্রভাগের ভাজক কলার তরুণ কোষ থেকে উদ্ভিদ হরমোন নিঃসৃত হয়। | 1. প্রাণীদেহে নির্দিষ্ট অনাল গ্রন্থি অথবা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে প্রাণী হরমোন নিঃসৃত হয়। |
2. প্রকৃতি | 2. উদ্ভিদ হরমোন প্রধানত প্রোটিন ধর্মী হয়। ব্যতিক্রম- জিব্বারেলিন | 2. প্রাণী হরমোন প্রোটিন বা স্টেরয়েড বা অ্যামাইনো ধর্মী হয়। |
3. পরিবহন | 3. উদ্ভিদ হরমোন ব্যাপন প্রক্রিয়ায় অথবা ফ্লোয়েম সংবহন কলার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। | 3. প্রাণী হরমোন প্রধানত রক্ত ও লসিকার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। |
4. ব্যবহারিক প্রয়োগ | 4. উদ্ভিদ হরমোনের ব্যবহার খুব বেশি। | 4. প্রাণী হরমোনের ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কম হয়। |
অ্যাড্রিনালিন
অ্যাড্রিনালিন হরমোন অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির মেডালা অঞ্চল থেকে নিঃসৃত হয়। অ্যাড্রিনালিন কে সংকটকালীন বা জরুরীকালীন হরমোন বলা হয় কারণ বিপদ কালে এই হরমোন দেহকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বনের উপযোগী করে তোলে।
অ্যাড্রিনালিন এর কাজ
অ্যাড্রিনালিন হরমোনের প্রধান প্রধান কাজ গুলি হল-
1. সংবহন তন্ত্রের উপর ক্রিয়া: অ্যাড্রিনালিন হরমোন- 1. হৃদপিন্ডের গতি বৃদ্ধি করে, 2. রক্তবাহ কে সংকুচিত করে রক্তচাপ বাড়ায়, 3. কার্ডিয়াক আউট পুট বাড়িয়ে দেয়।
2. রেচন তন্ত্রের উপর ক্রিয়া: অ্যাড্রিনালিন হরমোনের প্রভাবে মূত্রের পরিমাণ বেড়ে যায়, মূত্রের সঙ্গে শর্করা নির্গত হয় এবং মূত্রাশয়ের স্ফিংটার পেশী সংকোচন হয়।
3. শ্বসন তন্ত্রের উপর ক্রিয়া: ব্রঙ্কিওলের পেশীকে শিথিল করে এবং তাদের গহবর প্রসারিত করে।
4. বিপাক এর উপর ক্রিয়া: অ্যাড্রিনালিন হরমোন রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায় এবং B.M.R কে বাড়িয়ে দেয়।
5. পেশির উপর ক্রিয়া: অ্যাড্রিনালিন হরমোনের প্রভাবে সংকোচনশীলতা ধর্ম এবং পেশীর উত্তেজিতা বৃদ্ধি পায়।
ইস্ট্রোজেন হরমোন
ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণস্থল: ইস্ট্রোজেন হরমোন স্ত্রীলোকের ডিম্বাশয়ের পরিণত ডিম্বথলি থেকে নিঃসৃত হয়।
ইস্ট্রোজেন হরমোনের কাজ
ইস্ট্রোজেন হরমোনের কাজ গুলি হল-
1. ত্বকের নিচে স্নেহ পদার্থের সঞ্চয় ঘটিয়ে ইস্ট্রোজেন হরমোন নারীসুলভ দেহ গঠন করতে সাহায্য করে।
2. ইস্ট্রোজেন হরমোন হল স্টেরয়েডধর্মী, এই হরমোনটি স্ত্রীদেহের যৌনাঙ্গের পরিবর্তন এবং যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশে সাহায্য করে।
3. নারীর কোমল কণ্ঠস্বর এবং নারীর দেহের লোমের আধিক্যের জন্য ইস্ট্রোজেন হরমোনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
4. ইস্ট্রোজেন হরমোন মহিলাদের মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে।
5. ইস্ট্রোজেন হরমোন অধিক ক্ষরণের ফলে অল্প বয়সে যৌবনোদগম হয়।
6. ইস্ট্রোজেন হরমোন কম ক্ষরণের ফলে স্ত্রীলোকের যৌনাঙ্গ অপরিণিত থাকে এবং দেহের অন্যান্য গৌণ যৌন লক্ষণ ভালো ভাবে প্রকাশ পায় না।
প্রোজেস্টেরন হরমোন
প্রোজেস্টেরন হরমোনের ক্ষরণস্থল : প্রোজেস্টেরন হরমোন স্ত্রীলোকের ডিম্বাশয়ের পীতগ্রন্থি এবং প্লাসেন্টা থেকে ক্ষরিত হয়।
প্রোজেস্টেরন হরমোনের কাজ
1. প্রোজেস্টেরন হরমোন স্ত্রী দেহের গর্ভকালীন পরিবর্তন ঘটাতে সাহায্য করে।
2. প্রোজেস্টেরন হরমোন প্রসবের সময়ে স্ত্রী দেহকে প্রসবের উপযুক্ত করে তোলে।
3. ডিম্বাণু নিঃসরণ এবং ভ্রুণের বৃদ্ধিতে প্রোজেস্টেরন হরমোন সাহায্য করে।
4. প্রসবকালীন সময়ে প্রোজেস্টেরন হরমোন ডিম্বাশয়ে প্লাসেন্টা গঠনে সাহায্য করে।
5. প্রজেস্টেরন হরমোনের কম ক্ষরণের ফলে গর্ভপাত ঘটতে পারে।
*** ইস্ট্রোজেন হরমোন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোন দুটি স্ত্রীদেহে ডিম্বাশয় থেকে নিঃসৃত হরমোন।
টেস্টোস্টেরন হরমোন
টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরণস্থল: টেস্টোস্টেরন হরমোন শুক্রাশয়ের লেডিগের আন্তরকোশ থেকে নিঃসৃত হয়।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের কাজ
টেস্টোস্টেরন হরমোন এর প্রধান কাজ গুলি হল-
1. পুরুষদের যৌনাঙ্গের বিকাশ ঘটাতে টেস্টোস্টেরন হরমোন সাহায্য করে।
2. পুরুষ দেহে দাড়ি-গোঁফ এবং তলপেট ও বগলে কেশদগমসহ দেহে অন্যান্য গৌণ যৌন বিকাশে টেস্টোস্টেরন হরমোন সাহায্য করে।
3. পুরুষদের শুক্রানুর আয়ু এবং তার গর্ভাধান ক্ষমতা বাড়াতে টেস্টেস্টেরন হরমোনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
4. শুক্রাণু উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে।
5. টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে পুরুষদের গৌণ যৌন লক্ষণ প্রকাশ পায় না।
6. টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণের ফলে B.M.R বেড়ে গিয়ে দেহের অস্থি ও পেশি সহ অন্যান্য অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটে।
7. রক্তের RBC উৎপাদনে টেস্টোস্টেরন হরমোন সাহায্য করে।
হরমোনের দু তিনটি বাক্যে প্রশ্ন উত্তর
1. হরমােনকে রাসায়নিক সমন্বয়কারী বলে কেন?
উঃ হরমােন কোষে কোষে রাসায়নিক সমন্বয় সাধন করে বলে হরমােনকে রাসায়নিক সমন্বয়কারী।
2. লােকাল হরমােন কাকে বলে?
উঃ যে হরমােন উৎস গ্রন্থিতে বা উৎসস্থলে ক্রিয়া করে তাকে লােকাল হরমােন বলে। যেমন : টেস্টোস্টেরন।
3. ট্রফিক হরমােন কাকে বলে?
উঃ যে হরমােন কোন একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়ে অপর কোন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিকে হরমােন ক্ষরণে উদ্দীপিত করে, তাকে ট্রফিক হরমােন বলে। যেমন : T.S.H.
4. মিশ্র গ্রন্থি কাকে বলে?
উঃ যে গ্রন্থি অনাল ও সনাল উভয় প্রকার গ্রন্থির সমন্বয়েই গঠিত তাকে মিশ্র গ্রন্থি বলে, যেমন : অগ্ন্যাশয়।
5. অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি কাকে বলে?
উঃ যে সব গ্রন্থির ক্ষরণ গ্রন্থির বাইরে আসে না বরং গ্রন্থি-কোষ থেকে নিঃসৃত হয়ে সরাসরি রক্তে মিশে যায়, সেই গ্রন্থিকে অন্তঃক্ষরা বা অনাল গ্রন্থি বলে। যেমন : পিটুইটারি, থাইরয়েড, অ্যাড্রিনাল ইত্যাদি।
6. অগ্ন্যাশয়কে মিশ্রগ্রন্থি বলে কেন?
উঃ অগ্ন্যাশয় বহিঃক্ষরা এবং অন্তঃক্ষরা উভয় ধরনের গ্রন্থির সমন্বয়ে গঠিত হওয়ায় অগ্ন্যাশয়কে মিশ্রগ্রন্থি বলে।
7. বহিঃক্ষরা গ্রন্থি কাকে বলে?
উঃ যে সব গ্রন্থির ক্ষরণ নালীর মাধ্যমে গ্রন্থির বাইরে আসে তাদের বহিঃক্ষরা বা সনাল গ্রন্থি বলে। যেমন : লালাগ্রন্থি।
8. একটি প্রকল্পিত হরমােনের নাম ও তার কাজ কি?
উঃ ফ্লোরিজেন একটি প্রকল্পিত হরমােন। এর কাজ হল উদ্ভিদের ফুল ফোটাতে সাহায্য করা।
9. একটি গ্যাসীয় হরমােনের নাম ও তার কাজ কি?
উঃ ইথিলিন একটি গ্যাসীয় হরমােন। এর কাজ হল ফল পাকাতে সাহায্য করা।
10. অক্সিনের উৎস ও প্রধান কাজ কি?
উঃ অক্সিনের প্রধান উৎস হল কাণ্ড ও মূলের অগ্রভাগ। অক্সিনের প্রধান কাজ উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা।
11. জিবেরেলিনের প্রধান উৎস ও কাজ কি?
উঃ জিবেরেলিন পরিপক্ক ও অঙ্কুরিত বীজ থেকে নিঃসৃত হয়। এর প্রধান কাজ খর্বকার উদ্ভিদের দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি ঘটানো এবং ফুল ফোটানো। এছাড়া বীজের সুপ্ত অবস্থা ভঙ্গ করতে সাহায্য করা।
12. কাইনিনের প্রধান উৎস ও কাজ কি?
উঃ কাইনিন বীজের মধ্যে উৎপন্ন হয়। এই হরমােনটি কোশ বিভাজন এবং উদ্ভিদের জরা রােধে সাহায্য করে।
13. পিটুইটারি গ্রন্থিকে মাস্টার গ্ল্যান্ড বলে কেন? অথবা পিটুইটারি কে প্রভু গ্রন্থি বলা হয় কেন?
উঃ পিটুইটারি নিঃসৃত হরমােনগুলি অন্যান্য অনাল গ্রন্থির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে বলে পিটুইটারিকে মাস্টার গ্ল্যান্ড বা প্রভু গ্রন্থি বলা হয়।
14. পিটুইটারি গ্রন্থি কোথায় অবস্থিত?
উঃ পিটুইটারি মস্তিষ্কের মূলদেশে করােটির স্ফেনয়েড অস্থির সেলা-টারসিকা প্রকোষ্ঠে অবস্থিত।
15. থাইরয়েড গ্রন্থি কোথায় অবস্থিত?
উঃ থাইরয়েড গ্রন্থি গ্রীবাদেশে ট্রাকিয়ার দু'পাশে অবস্থিত।
16. অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি কোথায় অবস্থিত?
উঃ প্রতিটি বৃক্কের উপরে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি অবস্থিত।
17. আইলেটস্ অব ল্যাঙ্গারহ্যানস্ গ্রন্থি কোথায় অবস্থিত?
উঃ আইলেটস্ অব্ ল্যাঙ্গারহ্যানস্ গ্রন্থি অগ্ন্যাশয়ের মধ্যে অবস্থিত।
18. অ্যাড্রিনালিনকে সঙ্কটকালীন বা জরুরীকালীন হরমােন বলে কেন?
উঃ ভয়, ক্রোধ, দুঃশ্চিন্তা, মানসিক চাঞ্চল্য, উত্তেজনা প্রভৃতি অবস্থার সৃষ্টি হলে অ্যাড্রিনালিন হরমােন দ্রুত ক্ষরিত হয়ে হৃদগতি বাড়িয়ে দেয়, ফলে দ্রুত রক্ত চলাচল হয়ে উক্ত উত্তেজনা প্রশমিত করে এবং জরুরী অবস্থা দূরীভূত হলে আবার স্বাভাবিক ক্ষরণে ফিরে আসে। এইভাবে অ্যাড্রিনালিন দেহের জরুরী অবস্থা মােকাবিলা করে বলে একে জরুরীকালীন বা সংকটকালীন বা আপকালীন হরমােন বলে।
19. ইনসুলিনকে অ্যান্টিডায়াবেটিক হরমােন বলে কেন?
উঃ ইনসুলিন ডায়াবেটিস প্রতিরােধ করায় ইনসুলিনকে অ্যান্টিডায়াবেটিক হরমােন বলে।
20. ডায়াবেটিস মেলিটাস বা মধুমেহ কাকে বলে?
উ ইনসুলিন হরমােনের অভাবে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় (100 cc রক্তে 80 - 120 mg.) বৃদ্ধি পেলে যে রােগ হয় তাকে ডায়াবেটিস মেলিটাস বা মধুমেহ বলে।
20. কি কারণে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়?
উঃ রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ হ্রাস পেলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, ফলে মধুমেহ রােগ হয়।
21. ইনসুলিন কোথা থেকে ক্ষরিত হয় এবং এর প্রধান কাজ কি?
উঃ ইনসুলিন আইলেটস্ অব ল্যাঙ্গারহ্যানস্ গ্রন্থির বিটা কোষ থেকে নিঃসৃত হয়। ইনসুলিন হরমােনটি প্রধান কাজ হল রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা।
22. রক্তে কি উপায়ে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হয়?
উঃ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে ইনসুলিন রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজকে যকৃতে গ্লাইকোজেন রূপে সঞ্চিত রেখে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে; আবার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস পেলে গ্লুকাগন যকৃতে সঞ্চিত গ্লাইকোজেনকে গ্লুকোজরূপে রক্তে ছেড়ে দেয়, ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে।
23. থাইরক্সিন কোথা থেকে ক্ষরিত হয়? এর প্রধান কাজ কি?
উঃ থাইরক্সিন থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হয়।
থাইরক্সিন হরমােনের প্রধান কাজ হল দেহের বৃদ্ধি ও বিপাক নিয়ন্ত্রণ করা।
24. আড্রিনালিন কোথা থেকে ক্ষরিত হয় এবং এর প্রধান কাজ কি?
উঃ অ্যাড্রিনালিন অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির মেডালা অঞ্চল থেকে ক্ষরিত হয়।
সঙ্কটকালীন অবস্থায় দেহকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বনে সহায়তা করা এই হরমােনের প্রধান কাজ।
25. হাইপােগ্লাইসিমিয়া ও হাইপারগ্লাইসিমিয়া কাকে বলে?
উঃ রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিক অপেক্ষা হ্রাস পাওয়াকে হাইপােগ্লাইসিমিয়া এবং স্বাভাবিকের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়াকে হাইপারগ্লাইসিমিয়া বলে।
26. গ্লাইকোজেনেসিস ও গ্লাইকোজেনােলাইসিস কাকে বলে?
উঃ গ্লুকোজ থেকে গ্লাইকোজেন সংশ্লেষকে গ্লাইকোজেনেসিস এবং গ্লাইকোজেন বিশিষ্ট হয়ে কোন উৎপন্ন হওয়াকে গ্লাইকোজেনােলাইসিস বলে। উক্ত প্রক্রিয়া যকৃতে ও পেশীকোষে ঘটে।
27. গ্লুকোনিওজেনেসিস কাকে বলে ?
উঃ শর্করা ছাড়া প্রােটিন, ফ্যাট ইত্যাদি উপাদান থেকে গ্লাইকোজেন বা গ্লুকোজ উৎপাদনকে গ্লুকোনিওজেনেসিস বা নিওগ্লুকোনিওজেনেসিস বলে।
28. কৃষিক্ষেত্রে উদ্ভিদ হরমােনের কয়েকটি ব্যবহারিক প্রয়ােগ উল্লেখ কর।
উঃ বীজবিহীন ফল সৃষ্টি করার জন্য, কৃষিক্ষেত্রে আগাছা দমনের জন্য, কচি ফল, মুকুল ঝরা রােধ করার জন্য কৃত্রিম অক্সিন প্রয়ােগ করা হয়।
29. প্রাণিদেহে হরমােনের দুটি ব্যবহারিক প্রয়োেগ উল্লেখ কর।
উঃ (1) পিটুইটারি নির্যাস প্রয়ােগ করে মাছের প্রজনন ঘটানাে হয়।
(ii) অ্যাড্রিনালিন প্রয়ােগ করে হাঁপানির স্বাসকষ্ট লাঘব করা হয়।
30. ফিরােমােন কি?
উঃ পতঙ্গদের দেহ নিঃসৃত একরকমের হরমােন। এই হরমােনের প্রভাবে যাযাবর মথ, পিপিলিকা ইত্যাদি পতঙ্গ একজন আর একজনকে অনুসরণ করে।
31. একডাইজোন কি?
উঃ পতঙ্গদের মস্তিষ্কের নিউরাে-সিক্রেটারি কোষ থেকে নিঃসৃত হরমােন, যা পতঙ্গদের নির্মোচনে এবং শুককীটের রূপান্তরে সহায়তা করে।
32. সােমাটোফেরােট্রফিন কি?
উঃ চিংড়ির সাইনাস গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হরমােন, যা চিংড়ির দেহের রং পরিবর্তনে সাহায্য করে।
33. জুভেনাইল হরমােন কি?
উঃ পতঙ্গের মস্তিষ্কের করপাস অ্যালেটাম নামক গ্রন্থি নিঃসৃত হরমােন, যা পতঙ্গের নির্মোচন প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়ে লার্ভা ও পিউপা দশার স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে।
34. হরমােন ও নিউরােহরমােন কি?
উঃ হরমােন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিকোষ থেকে নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ, যা রক্ত বা দেহরস দ্বারা পরিবাহিত হয়ে দেহের অন্য অংশের কলা-কোষের কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। অপরপক্ষে, নিউরােহরমােন হল স্নায়ুকোষথেকে নিঃসৃত ও নিয়ন্ত্রিত রাসায়নিক পদার্থ।
35. অক্সিটোসিন ও ভেসােপ্রােসিনকে নিউরােহরমােন বলে কেন?
উঃ এই হরমােন দুটি সরাসরি গ্রন্থিকোষে সংশ্লেষিত হয় না। হাইপােথ্যালামাস থেকে উৎপন্ন হয়ে স্নায়ু পথে বাহিত হয়ে পশ্চাদ পিটুইটারিতে আসে এবং সেখান থেকে ক্ষরিত হয়ে রক্ত প্রবাহে মেশে। তাই এদের নিউরােহরমােন বলে।
36. কয়েকটি পাক-অন্ত্ৰীয় হরমােনের উদাহরণ দাও ?
উঃ গ্যাসট্রিন, সিক্রেটিন, এন্টারােগ্যাস্ট্রোন, প্যানক্রিওজাইমিন ইত্যাদি।
37. প্লাসেন্টা বা অমরা নিঃসৃত হরমােনের উদাহরণ কি?
উঃ ইষ্টোজেন, প্রােজেস্টেরন, রিলাক্সিন, কোরিওনিক গােনাডােট্রফিন।
38. ত্বকে উৎপন্ন হরমােনের নাম কি? বা ত্বকে উৎপন্ন হরমোনের উদাহরণ দাও।
উঃ অতি বেগুনী রশ্মির প্রভাবে ত্বকে ক্যালসিফেরল নামক হরমােন উৎপন্ন হয়।
39. বৃক্ক নিঃসৃত হরমােনের নাম কি?
উঃ রেনিন ও এরিথ্রোপয়েটিন।
40. দেহের প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায় এমন হরমােনের নাম কি?
উঃ প্রোষ্টাগ্লান্ডিন।
হরমোনের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
1. একটি নাইট্রোজেন বিহীন হরমোন এর উদাহরণ দাও ।
উঃ জিব্বেরেলিন হরমোন।
2. প্রাণিদেহে রাসায়নিক বার্তাবহ বা কেমিক্যাল মেসেঞ্জার রূপে কাজ করে কে?
উঃ হরমোন।
3. মানবদেহের একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির উদাহরণ দাও যা মস্তিষ্কে অবস্থিত।
উঃ পিটুইটারি।
4. বৃক্কের উপর কোন্ অনালগ্রন্থি অবস্থিত?
উঃ অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি।
5. অগ্নাশয়ের মধ্যে কোন অনালগ্রন্থি অবস্থিত ?
উঃ আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স।
6. গোনাডোট্রপিক হরমোন কোন গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হয়?
উঃ পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে।
7. কোন গ্রন্থিকে প্রভু গ্রন্থি বলে?
উঃ পিটুইটারি গ্রন্থিকে।
8. আমাদের দেহে অবস্থিত একটি মিশ্র গ্রন্থির উদাহরণ দাও।
উঃ অগ্নাশয়।
9. আপৎকালীন বা সঙ্কটকালীন হরমােন কোনটি ?
উঃ অ্যাড্রিনালিন হরমোনকে।
10. আয়ােডিন কোন্ হরমােনের উদাহরণ ?
উঃ থাইরক্সিন হরমোন।
11. কোন্ হরমােনের অভাবে বহুমূত্র রােগ হয়?
উঃ A.D.H বা অ্যান্টি ডাইইউরেটিক হরমোন বা ভেসোপ্রোসিন হরমোনের অভাবে বহুমূত্র রোগ হয়।
12. কোন্ হরমােনের অভাবে মধুমেহ রােগ হয় ?
উঃ ইনসুলিনের অভাবে মধুমেহ রোগ হয়।
13. কোন্ হরমােনের অভাবে ক্রেটিনিজম রােগ হয় ?
উঃ থাইরক্সিনের কম ক্ষরণের ফলে শিশুদের ক্রেটিনিজম রোগ হয়।
14. কোন্ হরমােনের অভাবে বামনত্ব রােগ হয়?
উঃ S.T.H বা সোমাটোট্রফিক হরমোন এর কম ক্ষরণে বামনত্ব বা ডোয়ারফিজম রোগ হয়।
15. কোন্ হরমােনের অধিকক্ষরণে অতিকায়ত্ব রােগ হয় ?
উঃ S.T.H বা সোমাটোট্রফিক হরমোন এর অধিক ক্ষরণে অতিকায়ত্ব বা জাইগ্যানটিজম বা অ্যাক্রোমেগালি রোগ হয়।
16. কোন্ হরমােনের অধিক ক্ষরণে গয়টার বা গলগণ্ড বৃদ্ধি হয় ?
উঃ থাইরক্সিন হরমােনের অধিক ক্ষরণে গয়টার বা গলগণ্ড বৃদ্ধি হয় ।
17. একটি হরমােনের নাম কর যা অ্যাডরিনাল গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে ?
উঃ A.C.T.H বা অ্যাডরিনো কর্টিকোট্রফিক হরমোন।
18. কোন্ হরমােন থাইরয়েড গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে?
উঃ T.S.H বা থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন।
19. রক্তে শর্করার (গ্লুকোজ) স্বাভাবিক পরিমাণ কত ?
উঃ প্রতি 100 ml রক্তে শর্করার স্বাভাবিক পরিমাণ 80-120 mg.
20. I.C.S.H.-এর পুরাে নাম কি?
উঃ ইন্টারস্টিশিয়াল সেল স্টিমুলেটিং হরমোন।
21. F.S.H.-এর পুরাে নাম কি?
উঃ ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন।
22. L.H.-এর পুরাে নাম কি?
উঃ লিউটিনাইজিং হরমোন।
23. L.T.H.-এর পুরাে নাম কি?
উঃ লিউটোট্রফিক হরমোন।
24. রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়াকে কি বলে?
উঃ হাইপোগ্লাইসিমিয়া বলে।
25. রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে কি বলে?
উঃ হাইপারগ্লাইসিমিয়া বলে।
26. কোন্ হরমােনের অভাবে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় ?
উঃ ইনসুলিনের অভাবে।
27. কোন হরমােন হৃদ্গতি বাড়িয়ে দেয় ?
উঃ থাইরক্সিন হরমোন।
28. কোন্ হরমােন B.M.R. বাড়িয়ে দেয় ?
উঃ অ্যাড্রিনালিন হরমোন।
29. কোন্ হরমােন ব্যাঙাচির রূপান্তরে সাহায্যে করে?
উঃ থাইরক্সিন হরমোন।
30. ইনসুলিনের বিপরীত হরমােন কোনটি ?
উঃ গ্লুকাগন।
31. অ্যাড্রিনালিন হরমােনের বিপরীত হরমােন কোটি?
উঃ নর- অ্যাড্রিনালিন হরমোন।
32. একটি লােকাল হরমােনের উদাহরণ দাও।
উঃ হিস্টামিন, গ্যাস্ট্রিন।
33. একটি ট্রফিক হরমােনের উদাহরণ দাও?
উঃ A.C.T.H এবং S.T.H বা সোমাটোট্রফিক হরমোন
34. ফুল ফোটাতে সাহায্য করে কোন্ হরমােন ?
উঃ জিব্বেরেলিন হরমোন, ফ্লোরিজেন হরমোন।
35. ফল পাকতে সাহায্য করে কোন হরমােন ?
উঃ ইথিলিন এটি একটি গ্যাসীয় হরমোন।
36. I.A.A.-এর পুরাে নাম কি?
উঃ ইনডোল অ্যাসিটিক অ্যাসিড।
37. G.A.-এর পুরাে নাম কি?
উঃ জিব্বেরেলিক অ্যাসিড।
38. উদ্ভিদের কোলিওপটাইলে কোন্ হরমােন পাওয়া যায় ?
উঃ অক্সিন হরমোন।
39. একটি হরমােনের নাম কর যা উদ্ভিদ দেহে পাওয়া যায়।
উঃ অক্সিন হরমোন।
40. বীজবিহীন ফল সৃষ্টি করে কোন্ হরমােন ?
উঃ অক্সিন হরমোন।
41. উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে কোন্ হরমােন ?
উঃ অক্সিন হরমোন।
42. কৃষিক্ষেত্রে আগাছা দমন করে কোন্ কৃত্রিম হরমােন ?
উঃ অক্সিন হরমোন ।
43. বীজপত্রে এবং পরিপক্ক বীজে পাওয়া যায় কোন্ হরমােন ?
উঃ জিব্বেরেলিন হরমোন।
44. উদ্ভিদের জরা রােগে সাহায্য করে কোন হরমােন ?
উঃ কাইনিন।
45. কোন হরমােন প্রয়ােগ করে দ্বিবর্ষজীবী
উদ্ভিদের প্রথম বছরে ফুল ফোটান হয়?
উঃ জিব্বেরেলিন হরমোন।
46. নারকোলের শস্যে কি হরমােন পাওয়া যায় ?
উঃ কাইনিন।
47. উদ্ভিদের কোষ বিভাজনে সাহায্য করে কোন্ হরমােন ?
উঃ কাইনিন।
48. পাতাবাহার গাছকে দীর্ঘদিন সজীব রাখার জন্য কোন হরমােন প্রয়ােগ করা হয় ?
উঃ কাইনিন হরমোন।
49. লেটুস শাকের বীজের দ্রুত অঙ্কুরােদ্গমের জন্য কোন্ হরমােন প্রয়ােগ করা হয়?
উঃ জিব্বেরেলিন হরমোন।
50. উদ্ভিদের অপরিণত অঙ্গের মােচন রােধ করার জন্য কোন্ হরমােন স্প্রে করা হয়?
উঃ 2 ,4- D, এবং NAA ( ন্যাপথাথলিন অ্যাসিটিক অ্যাসিড।)
Very good
Very good
😍
Amezing 😍